গত মৌসুমে লিগে তৃতীয় হওয়া আবাহনী এবার নতুন মৌসুমে চেয়েছিল আটঘাট বেঁধে দলবদলে নামতে। কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলে সে চাওয়া হোঁচট খেয়েছে। স্থানীয় ফুটবলারদের নিয়েই ঘর গুছিয়ে নেওয়া ঐতিহ্যবাহী দলটি তাই আসছে মৌসুম নিয়ে দেখছে না কোনো বড় স্বপ্ন। দলবদলের শেষ দিনে মোট ৩২ জন খেলোয়াড়ের নিবন্ধন করেছে আবাহনী। দলে নেই কোনো বিদেশি খেলোয়াড়। বিদেশি কোচ নেওয়ার সম্ভাবনাও নেই। সব মিলিয়ে স্থানীয় কোচ, খেলোয়াড়ের কাঁধে ২০২৪–২৫ মৌসুমে সওয়ার হচ্ছে দলটি। ২০০৭ সালে প্রিমিয়ার লিগ নামকরণের পর থেকে এই প্রতিযোগিতায় রেকর্ড ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। ২০১৭–১৮ মৌসুমে সবশেষ লিগ শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল তারা। এরপর থেকেই উল্টোরথে দেশের ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী দলটি। ২০২২–২৩ মৌসুমে রানার্সআপ হওয়ার পর গত মৌসুমে আকাশী–নীল জার্সিধারীরা লিগ টেবিলে ছিল তৃতীয় স্থানে। শিরোপা জয়ী বসুন্ধরা কিংসের সাথে পয়েন্ট ব্যবধান ছিল ১৩। এবার লিগ মুকুট ফিরে পাওয়ার আশা নিয়ে চার মাস আগে থেকে দল গোছানো শুরু হয়েছিল বলে জানান দলটির টিম ম্যানেজার কাজী নজরুল ইসলাম। কিন্তু গত ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পালাবদলে ভাঙচুরের শিকার হওয়া ক্লাবটি আর্থিক সংকটের কারণে, এবার দল গড়েছে বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়াই। এমনকি আর্থিক বিষয়ে সমঝোতা না হওয়ায় জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকেও ধরে রাখতে পারেনি আবাহনী। আসছে মৌসুমে দল কেমন করবে তাই অনিশ্চয়তায় নজরুলও। স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে আমরা দল গড়েছি। অন্যরা কেমন দল গড়েছে, সেটা দেখার সুযোগ এখনও আমি পাইনি। অন্য দলের পরিস্থিতি দেখলে আসলে বুঝতে পারব আমাদের দলটা কেমন। এখনও ক্যাম্প শুরুর দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। বাফুফে যখন সূচি দেবে, সে অনুযায়ী ক্যাম্প শুরু করব। আমরা স্থানীয় কোচ নিয়োগ দেব। ক্লাবের যেহেতু আর্থিক সংকট যাচ্ছে, এ কারণে আমরা বিদেশি খেলোয়াড় নিতে পারিনি। তবে স্থানীয়দের নিয়ে ভালো দলই গড়েছি। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য গতবারও আমরা স্থানীয় পর্যায়ের ভালো ভালো খেলোয়াড় দলে টেনেছিলাম, সাথে কিছু বিদেশিও নিয়েছিলাম। এবার যেহেতু বিদেশি নিতে পারিনি, স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে আমরা আসলে কতদূর যেতে পারব, সেটা অন্য দলগুলোর অবস্থা না দেখে এ মুহূর্তে বলা কঠিন। নতুনদের মধ্যে মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সুমন রেজা, আসাদুল মোল্লা, মিরাজুল ইসলাম, আমিনুর রহমান সজীবদের দলে টেনেছে আবাহনী। গোলরক্ষকদের মধ্যে আছে জাতীয় দলের পোস্ট সামলানো মিতুল মারমা। বিদেশি ফুটবলার না থাকার কমতিটুকু থাকলেও ভালো ফলের আশা করছেন নজরুল। স্থানীয় ফুটবলারদের অনেকেই অভিযোগ করেন, বিদেশিদের কারণে তারা খুব বেশি সুযোগ পান না। আবাহনীর হয়ে নিজেদের সেরাটা মেলে ধরার সুবর্ণ সুযোগ এবার স্থানীয়দের সামনে। স্থানীয়দের যাদের নিয়েছি, তারা আবাহনীর জন্য ঠিক আছে। শুধু বিদেশিদের নিতে পারিনি। দ্বিতীয় লেগে দেখা যাক বিদেশি খেলোয়াড় আমরা দলে টানতে পারি কিনা।