প্রায় সাড়ে চার মাস পর আবার টেস্ট ক্রিকেট খেলতে নামছে বাংলাদেশ দল। আর সেটা এমন একটি দলের বিপক্ষে যে দলটির বিপক্ষে কখনোই টেস্ট ম্যাচ জিততে পারেনি টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের মত দলের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ জিতলেও এখনো পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পায়নি বাংলাদেশ। আর সে খরা কাটাতেই আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ দল। এই দলটির বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ১৩টি টেস্ট খেলেছে। যেখানে এখনো জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ১২টি ম্যাচ হেরেছে ও একটিতে ড্র করেছে টাইগাররা। ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে হওয়া একমাত্র ড্রটি পাকিস্তানের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত সেরা সাফল্য বাংলাদেশের। দু’দলের মধ্যকার সর্বশেষ টেস্টে পাকিস্তানের মাটিতে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার সে পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙার অপেক্ষায় টাইগাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আজ রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস ও গাজী টিভি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে লাল বলের ক্রিকেটে ব্যস্ত মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী চার মাসে ৮টি টেস্ট খেলবে টাইগাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের পর এ বছরই ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আরও ছয়টি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। তাই এ যাত্রায় শুরুটা ভাল করতে চায় টাইগাররা। সাদা বলের ক্রিকেট নিয়ে যখন জাতীয় দলের অন্যান্য ক্রিকেটাররা ব্যস্ত ছিলো তখন টেস্ট দলের নিয়মিত খেলোয়াড়দের নিয়ে চট্টগ্রামে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কন্ডিশনিং ক্যাম্পটি পুরোপুরিভাবে কাজে লাগাতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। দেশের মাটিতে ক্যাম্প করতে না পারলেও লাহোরে বাংলাদেশের জন্য অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলো পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। টেস্ট সিরিজের আগে পাকিস্তানের মাটিতে অনুশীলন ক্যাম্পটি উপকারী ছিল বলে জানিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
প্রথম টেস্টের আগে রাওয়ালপিন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, গত কয়েক দিন আমাদের জন্য কঠিন ছিল। সবাই পরিশ্রম করেছে। আমরা ক্রিকেট খেলতে চাই এবং আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আশা করি ভালো পারফরমেন্স করবো এবং ভালোভাবে আমাদের দীর্ঘ টেস্ট মৌসুমটা শুরু করতে পারবো। এটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
বাংলাদেশের ব্যাটিং পারফরমেন্স নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও অতীত রেকর্ড বলছে পাকিস্তানের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক। ইতোমধ্যে প্রথম টেস্টের একাদশ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। পেসারদের নিয়েই বোলিং আক্রমণ সাজিয়েছে তারা। ২৮ বছরের মধ্যে এই প্রথম স্পিনার ছাড়াই ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে নামবে পাকিস্তান। ধারণা করা হচ্ছে উইকেট পেস সহায়ক হতে পারে। টাইগার অধিনায়ক বলেন আমরাও ভালো পেস বোলিং বিভাগ তৈরি করেছি। পেস সহায়ক উইকেটে পেসারদের নিয়ে আমরা আশাবাদী। যেকোনো পরিস্থিতি সামলাতে পারে আমাদের স্পিনাররাও এবং এর অর্থ হলো আমরা সব কিছুর জন্য প্রস্তুত। এ বছরের এপ্রিলে পাকিস্তান টেস্ট দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পথচলা শুরু করবেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার জেসন গিলেস্পি। অধিনায়ক হিসেবে দেশের মাটিতে প্রথমবারের মত দলকে নেতৃত্ব দিবেন শান মাসুদ। বড় ফরম্যাটে পাকিস্তানের জন্য নতুন যুগের সূচনা হবে। তাইতো ম্যাচের আগে দারুন রোমাঞ্চ অনুভব করছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। আমাদের প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে যারা সিরিজে ভালো পারফর্ম করতে মুখিয়ে আছে। আমাদের বোলাররা ২০ উইকেট নিতে এবং দলকে ম্যাচ জয়ের স্বাদ দিতে সক্ষম। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আসন্ন ব্যস্ত মৌসুমের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং আমরা ভালো পারফর্ম করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সিরিজের আগে আমাদের কিছু ভালো অনুশীলন সেশন ছিলো এবং কোচিং স্টাফদের সাথে কঠোর পরিশ্রম করেছে খেলোয়াড়রা। তাই দেখার বিষয় পাকিস্তান তাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে নাকি বাংলাদেশ পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙে।