আট বছর পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরী, যাকে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জামিনের কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন জানান। তিনি বলেন, আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা ছিল। পর্যায়ক্রমে সেগুলোতে জামিন হয়েছে। সর্বশেষ মামলায় তাকে সোমবার উচ্চ আদালত জামিন দিয়েছেন।
আসলাম চৌধুরীর আইনজীবী কেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৭৬টি মামলা ছিল। সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ঢাকার কোতোয়ালি থানার একটি মামলায় আসলাম চৌধুরীর নাম না থাকার পরও তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছিল। সোমবার আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে তাকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। রাজনৈতিক মামলার পাশাপাশি আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদক, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অন্তত ২০টি মামলা আছে।
বিডিনিউজ জানায়, সোমবার জামিন মেলায় মঙ্গলবার সকালে আসলাম চৌধুরী চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন, সে খবর আগেই দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাকে স্বাগত জানাতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে দলীয় নেতাকর্মীরা সকাল ৯টার আগে থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে ভিড় করতে থাকেন। ট্রাক, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে কর্মীরা কারাগারের সামনের সড়কে জড়ো হন। সকাল ১০টার দিকে আসলাম চৌধুরী কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই দলীয় কর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে ফুল দিয়ে তাকে বরণ করে নেন। গলায় গোলাপ ফুলের মালা পরা আসলাম চৌধুরী ছাদ খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর সামনে পেছনে মোটর সাইকেল, ট্রাক ও অন্যান্য গাড়ি বহর নিয়ে আসলাম চৌধুরীকে নিয়ে এগিয়ে যান বাড়ির পথে। সীতাকুণ্ড থেকে বড় দারোগাহাট পর্যন্ত শোডাউন কালে তিনি একাধিক পথসভায় বক্তব্য রাখেন।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বিগত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার আমাকে শতাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে দীর্ঘ ৮ বছরেরও অধিক সময় কারাগারে আটকে রেখেছিল। আমাদের লাখ লাখ নেতা কর্মীকে জেল ও হয়রানি করেছে। আমার সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে বাধ্য করেছে, আমাকে রাজনীতি না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে, অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছে। তারপরও আমি স্বৈরাচারের কাছে মাথা নত করিনি। আপনারাও আমাকে কত যে ভালোবাসা দিয়েছেন এই প্রবল বর্ষণে, এই দৃশ্য দেখে আমার রাজনীতি জীবন সার্থক বলে মনে করছি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মো. সালাউদ্দিন, উপজেলা বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন দুলাল, ইউসুফ নিজামী, সীতাকুণ্ড পৌরসভা কমিশনার শামসুল আলম আজাদ, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী মো. মহিউদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মনসুর, কাজী মো. এনাম, মোহাম্মদ আকবর হোসেন, মো. জাফর ভূঁইয়া, আলাউদ্দিন মাসুম, সরোয়ার কামাল, সেলিম উদ্দিন, মো. সালাউদ্দিন, এডভোকেট সরওয়ার আলম, এডভোকেট আইনুল কামাল, আবুল কালাম আজাদ, মহিলা নেত্রী শামিম আরা নার্গিস, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুর করিম চৌধুরী, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাহাবুদ্দিন রাজু ও পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আওরঙ্গজেব মোস্তফা, সহ সভাপতি ইসমাঈল হোসেন, লোকমান, আসলাম চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী মঞ্জুরুল ইসলাম মনজু, পৌর যুবদলের সভাপতি অমলেন্দু কনক, রোকন উদ্দিন মেম্বার, সেলিম মাহমুদ, বাবুল শাস্ত্রী, মোহসীন আলী, আবু সালেক, আব্দুল মান্নান, সালাউদ্দিন সোহাগ, সোহেল আরমান, কাজী বদর উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, একরামুল হক, আলাউদ্দিন, কামরুল হাসান, মাহমুদুল হাসান বাদল, ইকবাল বাহার, জামশেদ, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বখতিয়ার উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন আব্দুল আলিম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহ–সভাপতি মামুন উর রশিদ মামুন।