লাইটারেজ জাহাজ মালিকদের তিনটি সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলে (ডব্লিউটিসি) তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে প্রভাবশালী জাহাজ মালিকদের একটি অংশ ডব্লিউটিসিতে তালা ঝুলিয়ে দেয় বলে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। এই ধরণের জবরদস্তিতে সাধারণ জাহাজ মালিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন রুটে চলাচলকারী লাইটারেজ জাহাজ মালিকদের তিনটি সংগঠন রয়েছে। বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশন (বিসিভোয়া), কোস্টাল ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশন (কোয়াব) এবং ইনল্যান্ড ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশন অব চিটাগাংয়ের (আইভোয়াক) নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়েই ডব্লিউটিসি গঠন করা হয়। কেউ ইচ্ছে করলে ডব্লিউটিসিতে এসে চেয়ার দখল করার সুযোগ নেই।
ডব্লিউটিসিতে নের্তৃত্ব দিতে হলে প্রথমে তাকে জাহাজ মালিকদের উপরোক্ত তিনটি সংগঠনের যে কোন একটির কার্যকরী পরিষদে নির্বাচিত হতে হবে। পরবর্তীতে ওই সংগঠনের মনোনয়ন নিয়ে ডব্লিউটিসিতে আসতে হবে।
ডব্লিউটিসির কনভেনর মোহাম্মদ নুরুল হক সোমবার দৈনিক আজাদীকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে ডব্লিউটিসি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের নাম ব্যবহার করেও ডব্লিউটিসি ভাঙা এবং দখল করার চেষ্টা করা হয়।
কিন্তু সাংগঠনিক ভিত্তি না থাকায় তারা সফল হননি। তিনি বলেন, একদিন আগে প্রচলিত নিয়ম কানুনের কোন তোয়াক্কা করে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত একজন জাহাজ মালিকের নেতৃত্বে রাতারাতি ডব্লিউটিসি দখলের চেষ্টা করা হয়েছে।
নগরীর আগ্রাবাদস্থ কাদেরী চেম্বারস্থ ডব্লিউটিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা পুরো বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।
ডব্লিউটিসিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় সংস্থার কর্মকর্তা কর্মচারীরা অফিস করতে পারছেন না। অফিসের ভিতরে বহু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আটকা পড়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, এই ধরনের দখলদারিত্বের চেষ্টা করা হলে পুরো সেক্টরে বিশৃংখলা তৈরি হবে। যা দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন রুটে পণ্য পরিবহনসহ দেশব্যাপী পণ্য সরবরাহ নেটওয়ার্ক হুমকির মুখে পড়বে।
উল্লেখ্য, দেশে প্রায় দেড় হাজারের মতো লাইটারেজ জাহাজ রয়েছে। এসব জাহাজের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে দেশের অন্তত ২৫টি গন্তব্যে পণ্য পরিবহন করা হয়।