চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নারায়ণহাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ তৌহিদুল আলমের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ। একইসাথে পদত্যাগ না করার জন্য এবং অধ্যক্ষকে নিয়ে ‘মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীদের আরেকটি পক্ষ। একপর্যায়ে তারা একে অপরের সাথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটেছে। বেলা ১২টা পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষার্থী স্কুলের ভেতরে অবস্থান নিয়ে অধ্যক্ষের পক্ষে এবং বিপক্ষে কর্মসূচি চালিয়ে যায়।
জানা যায়, নারায়ণহাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. তৌহিদুল আলমের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে তার পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষার্থীদের একপক্ষ আল্টিমেটাম দেয়। ইউএনওসহ বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দাখিল করে। গতকাল ছিল আল্টিমেটামের শেষদিন। এদিন তার পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কলেজ গেটের বাইরে জড়ো হয়ে মিছিল শুরু করে। অন্যদিকে পদত্যাগ না করতে শিক্ষার্থীদের অন্য একটি পক্ষ গেটের ভেতরে মিছিল করে। একপর্যায়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগের পক্ষে এবং বিপক্ষে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীরা একে অপরের সাথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে মেয়ে শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে পদত্যাগ দাবি করা শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
পদত্যাগ দাবি করা একাধিক শিক্ষার্থী বলে, অধ্যক্ষ মো. তৌহিদুল আলম জোর করে শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের মিটিং মিছিলে যেতে বাধ্য করতেন। শিক্ষার্থীদের সাথে বেমানান ব্যবহার এবং শিক্ষার্থীদের মা–বাবা তুলে গালিগালাজ করতেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে হুমকি প্রদান করতেন। টাকা নিয়ে রশিদ না দিয়ে দুর্নীতি করতেন।
অন্যদিকে অন্যপক্ষের শিক্ষার্থীরা বলে, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি একজন সম্মানী মানুষ। মা বাবার মত স্নেহ করে পড়ান। তার বিরুদ্ধে যতসব অভিযোগ আনা হচ্ছে এসব কিছু ‘মিথ্যা’ বলে দাবি তাদের।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মো. তৌহিদুল আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেসব অভিযোগ নিয়ে আমার পদত্যাগ দাবি করছে সবগুলো অভিযোগ মিথ্যা। এ কলেজে আমি নিজেই রাজনীতির বিরুদ্ধে ছিলাম। শিক্ষার্থীরা যে দাবি দাওয়ার কথা বলছে এসব কিছুই আমার হাতে দেয়নি। গত ২বছর ধরে কলেজটি শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান এবং আমি নিজে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সুরাহা করা হবে। আপাতত ওই অধ্যক্ষকে ৩মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।