জনগণ ক্ষেপলে কি করতে পারে পোড়া ভবনগুলো তারই নিদর্শন: লোহাগাড়ায় ফারুক-ই-আজম

সাতকানিয়া-লোহাগাড়া প্রতিনিধি | রবিবার , ১৮ আগস্ট, ২০২৪ at ৪:০১ অপরাহ্ণ

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক- ই-আজম বলেছেন, মানুষের ক্ষোভ সহজাত, দীর্ঘকাল ধরে সংবিধানে আছে দেশের মালিক জনগণ, সেটা নানান ভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।

দেশের মালিক জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে জনগণ কি করতে পারে এই পোড়া ভবনগুলো তারই নিদর্শন, মানুষের অসন্তোষ এভাবেই প্রকাশিত হয়। এখানে যাঁরা কাজ করে তাঁরা দেশের সন্তান, প্রশাসনে যাঁরা কাজ করে তাঁরাও দেশের সন্তান, আমরা সবাই মিলেমিশে আবারও এই দেশটাকে গড়ে তুলব।

এসময় তিনি আরও বলেন, ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের কারণেই স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দোসররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, দেশের জন্য তাদের এই আত্মত্যাগ ও বলিদান জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বৈরাচারকে হটিয়ে ২য় বারের মতো স্বাধীনতা পেয়েছি, শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যেতে রাষ্ট্র দিবেনা। এই স্বাধীনতা ও বিপ্লবকে রক্ষা করতে হবে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের জনগণকে।

রবিবার ১৮ই আগষ্ট দুপুরে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানা ও উপজেলা পরিষদ ভবন পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা।

এর আগে লোহাগাড়ার আমিরাবাদ দর্জি পাড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ মোহাম্মদ ইসমামুল হক এর কবর জেয়ারত শেষে শহীদ ইসমাম এর শোকাহত পরিবারের সাথে কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মো: সাদি উর রহিম জাদিদ, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাসান, সাতকানিয়া সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান, লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি নাজমুন লায়েল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্নয়ক তালাত মাহমুদ রাফিসহ ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা, বড়হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জুনাইদ, আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা কাজী নুরুল আলম। লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এটিএম জাহেদ চৌধুরী, লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাজ্জাদুর রহমান। উপজেলা শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন এর সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ ইউসুফসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনে নেতৃবৃন্দ, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের গুলিতে প্রাণহানি হয় শতশত ছাত্র-জনতার। এসব ঘটনার জের ধরে শেষ তিন দিন (শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে-পরে) থানা, ফাঁড়িসহ পুলিশের বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ব্যাপকতায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর ৫ই আগষ্ট বিকেলে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানা ও উপজেলা পরিষদ ভবনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিত জনতা। এতে সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়ে যায় লোহাগাড়ার পুলিশি সেবা, একই ভাবে বন্ধ হয়ে যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কার্যক্রম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছয় বছর পর সস্ত্রীক দেশে ফিরলেন শফিক রেহমান
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে আ.লীগের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ দাবিতে পরিষদ ঘেরাও