কোটা সংস্কার আন্দোলন দিয়ে শুরু, এরপর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যূত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। এই আন্দোলনের পুরো সময় নীরব ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। এ নিয়ে তাকে পড়তে হয়েছে তীব্র সমালোচনার মুখে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টও করেননি মাশরাফি। সাবেক ক্রিকেটারের পাশাপাশি তিনি বিলুপ্ত সংসদের সদস্যও ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তার নড়াইলের বাড়িতে হামলাও হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বাড়ি। অবশেষে নিজের নীরবতা ভেঙেছেন মাশরাফি। কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদের পাশে না থাকতে পারার ব্যর্থতা মেনে নিয়েছেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে মাশরাফি বলেন, ‘এখন এইগুলোর উত্তর দেওয়াটা (নীরব থাকার) আমার কাছে মনে হয় একদম শুধু শুধু হবে। আর যদি এক কথায় উত্তর দেই, তাহলে বলতে হয় আমি আসলে ব্যর্থ হয়েছি এখানে। অ্যাবসুলেটলি ব্যর্থ হয়েছি।’ ‘দ্বিতীয় কথা হচ্ছে কথা যদি বলতো হতো, যৌক্তিক কোটা সংস্কার নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছিল শুরুতে; সবাই যখন চেয়েছিল আমি কথা বলি। তখন যৌক্তিকভাবে কোটা সংস্কার হবে এটা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছিল। বা আমার কাছে মনে হচ্ছিল কোটা সংস্কার হয়তো হবে।’ ‘কিন্তু তারপরে যে ঘটনাগুলো ঘটতে থাকলো। এমন একটা পরিস্থিতি হলো যে, যখন সবাই চাচ্ছে আমি একটা স্ট্যাটাস দেই বা পাশে থাকি; তখন পরিবেশটা এমন জায়গায় গিয়েছে, আমার কাছে মনে হচ্ছিল আমি যদি এখন স্ট্যাটাস দেই বা যেকোনো কিছু লেখি; সেটাকে কেন্দ্র করে যদি আরও বড় কিছু হয়ে যায়, ওই জিনিসটা সামাল দেওয়ার সক্ষমতা আমার আছে কি না।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু না লিখলেও পক্ষে থাকতে চেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মাশরাফি। সরকারের সঙ্গে কথা বলে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন মাশরাফি। কেন পারেননি? সাবেক অধিনায়ক জানিয়েছেন, রাজনীতির মাঠে এত প্রভাবশালী নন তিনি।
মাশরাফি বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে আসলে ঘটনাগুলো এত দ্রুত ঘটেছে, আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে আমি চেষ্টা করিনি সেটা না। আরেকটা বিষয় আমি স্ট্যাটাসের ভেতর সীমাবদ্ধ থাকতে চাইনি। আমি চেয়েছিলাম ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে বা তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কিছু করা যায় কি না।’ ‘আমি যদি একটা স্ট্যাটাস দিতাম, তাতে করে যা কিছু ঘটেছে, হয়েছে; তার থেকে কম হতো না। বরঞ্চ সার্বিকভাবে আমার যে ভয়টা কাজ করছিল, আমার স্ট্যাটাসের কারণে যদি জিনিসটা আরও বড় হয়ে যায় তখন সেটা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে কি না।’