ভারতে দুর্নীতি নিয়ে হিন্ডেনবার্গের নতুন রিপোর্ট, চাপে মোদী সরকার

| সোমবার , ১২ আগস্ট, ২০২৪ at ৭:২২ পূর্বাহ্ণ

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের নতুন রিপোর্টে আবারও তোলপাড় পড়ে গেছে ভারতে। রিপোর্টটিতে এবার আঙুল তোলা হয়েছে দেশটির শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড (সেবি)-এর চেয়ারপারসনের দিকে। হিন্ডেনবার্গের দাবি, আদানি গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণেই গ্রুপটির বিরুদ্ধে ঠিকভাবে তদন্ত করেননি সেবি প্রধান মাধবী পুরী বুচ। ২০২৩ সালের এক রিপোর্টে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ারমূল্য কারচুপির অভিযোগ তুলেছিল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। সেই রিপোর্ট প্রকাশের পর তোলপাড় পড়ে যায় ভারতে। বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে আদানি গ্রুপ।

এক পর্যায়ে চাপের মুখে গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু করে ভারতের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড, যার নেতৃত্বে ছিলেন মাধবী পুরী বুচ। কিন্তু তাদের সেই তদন্তে আদানির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। গত শনিবার নতুন রিপোর্টে হিন্ডেনবার্গ অভিযোগ করেছে, সংস্থার কর্ণধার নিজে জড়িত থাকার কারণেই আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ঠিকমতো তদন্ত করেনি সেবি।

হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট বলছে, বিদেশে যে দুই সংস্থার তহবিল ব্যবহার করে ঘুরপথে আদানিদের সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়েছিল, একসময় তার অংশীদার ছিলেন মাধবী। এ কারণেই হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট অনুযায়ী তদন্ত করে বিদেশি তহবিলের মালিকানার হদিস পায়নি সেবি।

হিন্ডেনবার্গের নতুন তদন্ত অনুযায়ী, গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানির বিদেশি সংস্থায় মাধবীর অংশীদারত্ব ছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাধবী এবং ধবল বারমুডা ও মরিশাসের দুটি তহবিলে লগ্নি করেছিলেন। সেই তহবিলের টাকা ঘুরপথে চলে যায় আদানিদের সংস্থায়। এভাবেই বাড়িয়ে তোলা হয় আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারদর।

মাধবী সেবিতে যোগ দেন ২০১৭ সালে। তার আগে ওই তহবিল থেকে বেরিয়ে গেলেও ২০১৮ সালে স্বামীর নাম করে ব্যক্তিগত ইু মেইল মারফত ইউনিট ভাঙান তিনি। এ কারণেই বিদেশি তহবিলের মালিকানার খোঁজ করতে আগ্রহ দেখায়নি ভারতের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড। হিন্ডেনবার্গের মতে, মালিকানার খোঁজ পেতে হলে সেবি প্রধানের উচিত আয়নার দিকে তাকানো।

রিপোর্টটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই তুলকালাম পড়ে গেছে ভারতে। এ নিয়ে সরব হয়েছেন দেশটির বিরোধী নেতারা। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তারা। ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এক টুইটে বলেছেন, ২০২৩ সালে হিন্ডেনবার্গেল রিপোর্ট আসার আগেও আদানিকে দায়মুক্তি দিলেছিলে সেবি।

এখন এর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে খোদ সেবি প্রধানেরই। এই কেলেঙ্কারি তদন্তে একটি যুগ্ম সংসদীয় কমিটি গঠন জরুরি। ততক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার মিত্রকে রক্ষা করতে থাকবেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকেমন হত যদি শনির মতো বলয় থাকত পৃথিবীর?
পরবর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়া সরফভাটায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ সহায়তা প্রদান