সরবরাহ সংকটের কারণে পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত। চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা বলছেন, বাজারে দেশী পেঁয়াজ ও ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম বাড়তি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুচরা বাজারে ৭০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বেশ কিছু গুজব জড়িয়ে পড়ে। এতে আতঙ্কিত হয়ে অনেক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ আমদানি করেননি। কারণ বর্তমানে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি মূল্য পড়ছে ৯০ টাকার উপরে।
গতকাল চাক্তাইয়ের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে বর্তমানে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। সেই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজি ১১০ টাকায়।
পেঁয়াজের আড়তদাররা বলছেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আড়তে ব্যবসায়ীরা কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। আমদানিকারকরা যে দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বলেন, আড়তদাররা সেই দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। আড়তদারদের পক্ষে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের দেশে পেঁয়াজের দরবৃদ্ধির সাথে সাথে প্রশাসনের লোকজন আড়তে অভিযান পরিচালনা করে। এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। অথচ আড়তদাররা পেঁয়াজ আমদানি করেন না। আসলে পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য, চাইলে মজুদ রাখা যায় না।
দামপাড়া এলাকার খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ রানা বলেন, পাইকারিতে দাম বেড়েছে, তাই আমরা বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছি। আমরা অল্প অল্প পেঁয়াজ এনে বিক্রি করি। পাইকারিতে কমে গেলে আমরাও কমিয়ে দিবো।
চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ সংকট রয়েছে। বর্তমানে দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ নাই বললেই চলে। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজের বুকিং দর ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ আসেনি।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজের বাজারে এখন কিছুটা সরবরাহ সংকট রয়েছে। সরবরাহ সংকটের কারণে মূলত দাম বাড়ছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে যাবে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন কিছু নয়। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করেন। ব্যবসায়ীরা যেন কোনোভাবে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দামবৃদ্ধি করতে না পারেন সেজন্য প্রশাসনকে বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে।