পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেছেন, আমাদের সবার সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশের সঙ্গেই আমরা ভালো সম্পর্ক চাই। গতকাল রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এম তৌহিদ হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে এম তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা সবার প্রথমে দেশে স্থিতিশীলতা আনতে চাই। তারপর পরিস্থিতি বোঝা যাবে। সে অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমেই এ সরকার সরে যাবে। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনতে চাই। তবে দেশকে স্বর্গ বানিয়ে যেতে পারব না। আশা করি, পথ দেখিয়ে দিতে পারব। খবর বাংলানিউজের।
এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, বিদেশিদের যে কনসার্ন, তা আমাদেরও কনসার্ন। আমরাও তাই চাই, দেশে কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যেন না ঘটে। তিনি বলেন, দেশে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তবে রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কোনো কারণেই যেন সহিংসতা না হয়। কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।
তিনি জানান, সোমবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বসবেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। বিভিন্ন সময়ে সোনালি অধ্যায় বলা হয়েছে। তবে মানুষ যেন মনে করে, সত্যিকারভাবে দুই দেশের মধ্যে সোনালি অধ্যায় তৈরি হয়েছে। আমরা সবসময় আমাদের স্বার্থ দেখব, প্রতিবেশীর স্বার্থও দেখব।
উপদেষ্টা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে প্রয়োজন অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা দেব। আহতরা যেন সর্বোচ্চ চিকিৎসা পান তা আমরা নিশ্চিত করব। নিহত ও আহতদের সঠিক তালিকাও করা হবে।
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আইন মন্ত্রণালয় চিঠি দিলে উদ্যোগ নেওয়া হবে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আইন মন্ত্রণালয় চিঠি দিলে সে অনুযায়ী উদ্যোগ নেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি পদত্যাগ করেছেন। (তার সেই পদত্যাগপত্র) রাষ্ট্রপতির কাছে আছে। এইটুকু আমি জানি।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে প্রবাসীদের সেবা দেওয়া। তবে আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। বিদেশের মিশনে কম অফিসার বলেই অনেক সময় কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া হয় না। তবে আমরা চাই হাসিমুখে যেন সেবা দেওয়া হয়।
আমিরাতে বন্দি শ্রমিকদের ছাড়াতে কথা বলব : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করার কারণে আরব আমিরাতে বন্দি বাংলাদেশিদের মুক্তির জন্য দেশটির সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা বলবেন তিনি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিচার করে অনেক বাংলাদেশিকে জেল দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা দেশটির সর্বোচ্চ পর্যায়ে কথা বলবেন, যাতে তাদের শাস্তি মওকুফ করা হয়। তারা (বাংলাদেশি) হয়তো সে সময় সে দেশের আইন কানুন ভুলে গিয়েছিলেন।