অর্থনৈতিক ভাগ্যের চাকা উন্নতি করতে সবাই চাই। সে জন্য লক্ষ লক্ষ যুবক দেশ ছেড়ে নিজের অবস্থার পরিবর্তন ও পরিবারের স্বচ্ছলতার হাসি ফোটাতে কাজের তাগিদে মরুর দেশ মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমান। কিন্তু প্রবাসে কথার সাথে কাজের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। তাঁর সাথে লেগে রয়েছে কাজের অত্যধিক চাপ এবং বেতন আটকে থাকা। এমতাবস্থায় কেউ চোখ বুজে সহ্য করে। অনেকে সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে অন্যত্র গিয়ে চাকরি করে; অবৈধভাবে গণ্য হয়। এই অবস্থায় পুলিশের কাছে যদি ধরা পড়ে তাহলে জেল খাটতে হয় এবং পরিশেষে তাঁদেরকে দেশে পাঠিয়ে দেয়। আর যদি ধরা না পড়ে সে ক্ষেত্রে ভিসায় জরিমানা জমা হতে থাকে। বছরের পর বছর অবৈধ প্রবাসীরা পদে পদে অনেক লাঞ্ছনা গঞ্জনার সাথে অমানুষিক দিনাতিপাত করছে। এমতাবস্থায় বিভিন্ন দেশ পাঁচ বছর কিংবা দশ বছর পর সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার অবৈধ অভিবাসীদের চলতি বছরের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে দু’মাসের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে। অবৈধ বাংলাদেশীদের জন্য সত্যি এটি সুখবর। দেশটিতে অবস্থানকারী রেসিডেন্সি ভিসায় অবৈধ অভিবাসীরা কোনো প্রকার জরিমানা ব্যতীতই বৈধতা লাভের সুযোগ পাবে। সম্প্রতি গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানান। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এই আইন আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে কার্যকর হওয়ার পর অবৈধ প্রবাসীরা যে কোনো নতুন স্পন্সর খুঁজে বৈধ হতে পারবেন। অথবা তারা চাইলে কোনো প্রকার জেল জরিমানা ছাড়া নিজ দেশে যেতে পারবেন। প্রসঙ্গত ২০২০–২১ সালে করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা চালু করে দিলে হাজার হাজার বাংলাদেশি ভিজিট এবং অন্যান্য ভিসায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবেশ করেন। ভিজিটে আসা এসব বাংলাদেশিদের মধ্যে অনেকে ভিসা পরিবর্তন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেলেও কেউ কেউ ভিজিট ভিসার মেয়াদ চলে যাওয়ায় অবৈধ হয়ে পড়েন। আমিরাতে ২০১৮ সালের সাধারণ ক্ষমার সময় ৫০ হাজার বাংলাদেশি সুবিধা পেয়েছিল। দীর্ঘ দিন অবৈধ বসবাসের কারণে অনেকে জরিমানা পরিশোধের ভয়ে দেশে ফেরত যাবার ইচ্ছে থাকলেও যেতে পারছে না। আমিরাত সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণায় প্রবাসীদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং সকল প্রকার ভিসা জটিলতার বাধা বিপত্তি দূর হয়ে গেল।