এবারের অলিম্পিকের ফুটবলে শুরু থেকেই দারুণ চমক সৃষ্টি করে আসছিল মরক্কো। প্রথম ম্যাচেই আর্জেন্টিনার মত দলকে হারিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল । অলিম্পিকের পুরুষ ফুটবলে ব্রোঞ্জ পদক জিতল মরক্কো। যদিও ব্রোঞ্জ পদক হয়ত অনেক দেশের কাছেই বড় কোন প্রাপ্তি নয়। কিন্তু মরক্কোর কাছে এটি কেবলই ব্রোঞ্জ পদক নয়। গর্ব করার মতো, গল্প বলার মতো অর্জন। অলিম্পিকের ফুটবলে যে এই প্রথম পদক পেল দেশটি। অলিম্পিক ফুটবলের ব্রোঞ্জ পদকের লড়াইয়ে আরেক আফ্রিকান দেশ মিশরকে পাত্তাই দেয়নি মরক্কো। একপেশে লড়াই ম্যাচটি জিতে নিয়েছে ৬–০ গোলের বিশাল ব্যবধানে। ম্যাচের প্রথমার্ধে দুই গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও চারটি গোল করে মরক্কো। খেলার ২৩ মিনিটে মরক্কোর হয়ে গোলের শুরুটা করেছিলেন আব্দে ইজ্জাজুলি। এরপর সুফিয়ানে রাহিমি দুটি এবং বিলাল এল খান্নৌস, আকরাম নাকাচ ও আশরাফ হাকিমি করেন একটি করে গোল। তাতেই অলিম্পিক ফুটবলে প্রথম পদক পাওয়ার গল্প লেখা হয়ে যায় মরক্কোর। এই ইভেন্টে আর্জেন্টিনাকে ২–১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ পর্বে আত্মবিশ্বাসী শুরুর পর দ্বিতীয় ম্যাচে হোঁচট খেয়েছিল মরক্কো। একই ব্যবধানে হেরে বসে ইউক্রেনের বিপক্ষে। তবে ওই ধাক্কার পর আর সেমি–ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে হারের আগ পর্যন্ত দারুণ উজ্জ্বল ছিলেন হাকিমি–রাহিমিরা। এই ব্রোঞ্জের সাফল্যের পথ ধরে হাকিমি এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তবে সোনা জয়ের চাওয়া পূরণ হলো না বলে একটু আক্ষেপের সুরও যেন বাজল রিয়াল মাদ্রিদের এই সাবেক ডিফেন্ডারের কণ্ঠে। এই পদক জিতে আমরা গর্বিত। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। সোনার পদক জিততে চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে ফাইনালে উঠতে পারিনি। তবে আমরা নিজেদের বৈশিষ্ট্য এবং মরক্কোকে ঐতিহাসিক পদক এনে দেওয়ার সামর্থ্য দেখিয়েছি। অধিনায়ক হিসেবে এখানে এবং মরক্কোতে থাকা সমর্থকদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা কেবল আমাদের দেশের জন্য নয়, আফ্রিকান ফুটবলের জন্যও অনেক দরজা খুলে দিয়েছি। আমরা এখানে আফ্রিকার দুটি দল তৃতীয়–চতুর্থ হওয়ার জন্য লড়াই করেছি। সবাই দেখেছে আমাদের মান। অলিম্পিক ফুটবলে প্রথম পদক প্রাপ্তির পর মরক্কোর কোচ তারিক সেক্টিউইয়ের মনে হচ্ছে সঠিক পথেই আছেন তারা। এই সাফল্য দেখাচ্ছে মরক্কোর ফুটবল সঠিক পথে আছে এবং আমরা ভালো উন্নতি করছি। বিশ্বকাপে আমরা যা করেছিলাম সেটা আমরা এখানেও করতে চেয়েছিলাম। গত বিশ্বকাপে চতুর্থ হয়েছিল মরক্কো। তাতে এখানে আমাদের সাফল্য পেতেই হতো। তবে আমরা চেষ্টা করেছিলাম আরো ভাল করতে । কিন্তু সেটা আমরা পারিনি। তবে অলিম্পিকের মত আসরে প্রথম পদক জিতে আমরা সত্যিই গর্বিত। এখন আমরা দেশের মানুষের জন্য কিছু নিয়ে যেতে পারছি।