দেশে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, আইন–শৃঙ্খলা রক্ষা এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে আওয়ামী স্বৈরাচারের চরম জুলুম, নির্যাতন, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বঞ্চনার শিকার হয়েছে দেশবাসী। ছাত্র জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে এই স্বৈরাচার উৎখাত হয়েছে। এই বিজয় অর্জনে অগণিত ছাত্র–ছাত্রীদের কে জীবন দিতে হয়েছে। এ বিজয়কে বিতর্কিত করতে পতিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখনো গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। অসংখ্য শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মহান বিজয়ের অর্জনকে ধরে রাখতে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। মহানগর জামায়াত কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, নগর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, মো. মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, নগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, নগর অফিস সেক্রেটারি এ এইচ এম কামাল, নগর উত্তর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, নগর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে নগর জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরী বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি নগরে একটি স্বার্থান্বেষী মহল সরকারি–বেসরকারি স্থাপনা ও ব্যক্তির উপর হামলা করছে। এটা কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। এ হীনকাজ যারা করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে প্রশাসন ও নগরবাসীকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান ও আইন–শৃঙ্খলা রক্ষায় জামায়াতে ইসলামী থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করে এলাকা ভিত্তিক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
তিনি সকল ধর্মের মানুষের পাশাপাশি মন্দিরসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসন ও নগরবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। একইসঙ্গে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জামায়াতের সকল নেতাকর্মী, ছাত্র–শিক্ষক, অভিভাবক ও সকল রাজনৈতিক দল এবং সর্বস্তরের জনগণের প্রতি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা কোনো অবস্থাতেই যেন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ছাত্র জনতার এ বিজয়কে নস্যাৎ করতে না পারে সেদিকে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য সাংবাদিক বন্ধুগণসহ সকলের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংসদীয় দলের সাবেক এ হুইপ বলেন, বিজয় অর্জনে গরীব খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে অসংখ্য নারী, শিশু, শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। অগণিত মানুষের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয় পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ জন্য মহান আল্লাহ তা’আলার শুকরিয়া আদায় করছি। একইসঙ্গে দেশবাসীকে ও নগরবাসীকে অভিনন্দন–শুভেচ্ছা জানাই। এই আন্দোলনে চার সাংবাদিক ও ১৪ জন পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছে। আমরা এ আন্দোলনে নিহত সকল শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি। একই সাথে হাজার হাজার চোখ হারানো, পঙ্গুত্ব বরণকারী ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং তাদের আশু আরোগ্য কামনা করছি