দেশের চলমান পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম নগরের সড়কগুলোতে নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ। সড়কগুলোতে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সড়কে যানবাহনের চাপ তেমন না থাকলেও ধীরে ধীরে তা বাড়ছে।
কিছুক্ষণ পরপর ব্যস্ততম মোড়গুলোতে দেখা যাচ্ছে স্বল্প আকারের যানজট। আর এই যানজট নিপুণ দক্ষতায় নিরসন করে যাচ্ছে কলেজ শিক্ষার্থীরা। ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় শিক্ষার্থীরা সড়কের মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে যানজট নিরসনে ব্যস্ত সময় পার করছে। গাড়ি চলাচলসহ অন্যান্য শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করে যাচ্ছে তারা। শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয়রা।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে নগরীর বহদ্দারহাট, চকবাজার, আন্দরকিল্লা মোড়, কোতোয়ালী, জামালখান, কাজীর দেউরি মোড়, নিউ মার্কেটসহ বিভিন্ন সড়ক এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। এছাড়া নগরীর কোন কোন মোড়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও স্কাউটসের স্বেচ্ছাসেবকদেরও দেখা গেছে। তারাও কাজ করছে শিক্ষার্থীদের সাথে। শিক্ষার্থীরা যাত্রীবাহী গাড়ির যাত্রী উঠা নামা জন্য আলাদা লেন নিশ্চিত করেছে। একইসঙ্গে কেউ যেন হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালাতে না পারেন সেদিকেও কড়া নজর রাখছে তারা।
অনেক শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে, রাস্তা দু–দ্বারে ময়লা আবর্জনা কুড়াতে। রাস্তা দ্বারে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত পলিথিন, কাগজসহ বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা কুড়িয়ে পলিথিনের বস্তা ভর্তি করে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় তাদের দায়িত্ব আমরা পালন করছি। আমাদের এই কাজে সকলেই হেল্প করছে এইটা বড় বিষয়। তাতে আমাদের উৎসাহ বাড়ছে। একটা মোড়ে আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থীরা কাজ করছি। আগে থেকে আমাদের একে অপরের সাথে পরিচয় না থাকলেও এখানে এসে আমাদের মধ্যে একটা সু–সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আমরা স্বেচ্ছায় যার যার মতো এই কাজে অংশগ্রহণ করেছি। সব চেয়ে বেশি ভালো লাগে সড়কে সবাই আমাদের কথা শুনছেন। সাধারণ জনগণ এই কাজে আমাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছে, এতে আমাদের উৎসাহ যোগাচ্ছে। দেশের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাদের এই সেবা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে ট্রাফিকের দায়িত্ব থাকা ক্লান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কোমল পানীয়, আইসক্রিম, মিষ্টিসহ বিভিন্ন খাবার নিয়ে ছুটে আসতে দেখে গেছে অনেককে। তারা শত উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে খাবারগুলো বিতরণ করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।
চট্টগ্রাম কাজীর দেউরি এলাকায় ক্লান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আইসক্রিম নিয়ে ছুটে আসা এক মহিলা বলেন, নগরের কোন সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। এই গরম মধ্যে শিক্ষার্থীরা যে ট্রাফিকে দায়িত্ব পালন করছে এইটা খুবই প্রশংসনীয় ব্যাপার। আমি তাদের স্যালুট জানাই। এই তীব্র গরমে একটু স্বত্বি দিতে তাদের জন্য আইসক্রিম নিয়ে এসেছি।