টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহামায়া লেকের পানি সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থান করছে। কৃত্রিম বাঁধ সৃষ্টির পর গত ১৪ বছরেও পানির এমন বৃদ্ধি দেখা যায়নি।
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলছেন, অতিবৃষ্টির কারণে পানির উচ্চতা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পেলেও বাঁধ ভাঙা বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই। তবে অতিমাত্রায় পানি বৃদ্ধির কারণে মহামায়া লেক এলাকার বিভিন্ন পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে মহামায়া লেকের পশ্চিমাংশে পূর্ব দুর্গাপুর অঞ্চলের অনেক স্থানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে কিছু পরিবার।
জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলার নিম্নাঞ্চলকে পাহাড়ি ঢলের পানি থেকে রক্ষা এবং শুকনো মৌসুমে চাষাবাদের লক্ষ্যে ২০০৯–২০১০ অর্থ বছরে সরকারের পাউবো মহামায়া ছড়ার ওপর বাঁধ তৈরি করে মহামায়া সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। এরপর সেখানে ১১ বর্গ কিলোমিটার কৃত্রিম লেকের সৃষ্টি হয়। যা পরবর্তীতে চট্টগ্রামের উল্লেখযোগ্য পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি পায়।
সরেজমিন মহামায়া এলাকায় গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মহামায়া লেকের পানি অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পায়। এতে বাঁধের দক্ষিণ অংশের ওভার ফ্লো হয়ে পানি উপচে পড়ছে। মহামায়া ইকো–পার্কের ইজারাদার এরাদুল হক ভূট্টু জানান, গত ১৪ বছরে মহামায়ার পানির এতোটুকু উচ্চতা আমরা দেখিনি। আপাতত পর্যটক প্রবেশ আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে খুলে দেয়া হবে।
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ–সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের জানান, পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়েছে। তবে বাঁধ ভাঙার মতো আশঙ্কা নেই। কারণ অতিরিক্ত পানি নিচে প্রবাহিত হওয়ার জন্য মূল স্লুইচ গেইট ছাড়াও বাঁধের দক্ষিণ পাশে ওভার ফ্লো গেইট রয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের মীরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহান শাহ্ নওশাদ জানান, মহামায়া লেকে নিচুভাগে নানা ধরনের ময়লা আবর্জনা এবং মাটি জমাট হয়ে লেকের স্তর পলিতে ভরে উঠায় পানির বৃদ্ধির হার বেড়েছে। ভূমি ধ্বসের আশঙ্কা থাকলেও বৃষ্টি কমে যাওয়ায় মনে হচ্ছে এমনটি হবে না।