খসরু, মীর নাছিরসহ বিএনপির চার নেতার বাসায় হামলা, ভাঙচুর

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৪ আগস্ট, ২০২৪ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও বর্তমান আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর চট্টগ্রামের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাসার নিচে থাকা গাড়ি। ভাঙচুর করা হয় বাড়ির জানালার কাচ। গতকাল রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। বিএনপির দাবি, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে।

সিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার তারেক আজিজ আজাদীকে বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে প্রত্যেকটি ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা গেছে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমীর খসরুর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে নগরের মেহেদীবাগ এলাকায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বাসায় হামলা ও আগুন দেওয়া হয়। এর মধ্যে খসরুর একটি এবং তার ভাই শাহনেওয়াজ চৌধুরীর দুটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। আগুন দেওয়া হয় খসরুর আরেক ভাই আবদুর রাজ্জাক মাহমুদ চৌধুরীর বাসার নিচে। আমীর খসরুর বাসায় প্রবেশ করে ভেতরে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় নগরের গোলপাহাড় থেকে মেহেদীবাগ পর্যন্ত এলাকায় দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

ঘটনার সময় বাসায় থাকা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছোট ভাই আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আমার ভাই কারাগারে। তিনি কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত নন। এরপরও আমাদের বাসায় ঢুকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা, ভাঙচুর করে গাড়িতে আগুন দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। এদিকে বাদশা মিয়া রোডে একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকা ডা. শাহাদাত হোসেনের বাসায়ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা ওই অ্যাপার্টমেন্টের নিচে পার্ক করে রাখা ৫টি গাড়িতে আগুন দেয়। ভাঙচুর করা হয় আরো কয়েকটি গাড়ি। শাহাদাতের বাসার জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার সময় ডা. শাহাদাত হোসেন ছিলেন না। তিনি আজাদীকে বলেন, আমার অসুস্থ মা ছিল। পুরো ভবন তো আমার না। এটা অ্যাপার্টমেন্ট। বিভিন্ন পেশা ও মতের লোকজন এখানে থাকেন। এমনকি আওয়ামী লীগেরও অনেকে থাকেন। নিচে পার্ক করে রাখা ৫টি গাড়িতে আগুন দেয় এবং পঁাঁচছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এমনকি বাসার দরজার সামনে ককটেল মারে। তিনি বলেন, ছাত্রদের আন্দোলন চলছে। আমরা তো প্রকাশ্যে তাদের কর্মসূচিতে যাইনি। তবুও কেন হামলা হলো?

শাহাদাত অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগযুবলীগের নেতাকর্মীরা দুই ঘণ্টা ঘরে তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশকে ফোন করলেও সাথে সাথে আসেনি। তারা চলে যাওয়ার অনেক পরে এসেছে।

এদিকে হামলার ঘটনা ঘটে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় থাকা এরশাদ উল্লাহর বাসায়ও। হামলাকারীরা তার বাসার কাচ ভাঙচুর করে এবং গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এরশাদ উল্লাহ আজাদীকে বলেন, কাউন্সিলর আবদুস সবুর লিটনের নেতৃত্বে আমার বাসায় হামলা হয়েছে। তারা একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। বাড়ির সবগুলো কাচ ভেঙে দিয়েছে। দরজায় কুপিয়েছে। হামলার সময় বাসায় ছিলেন উল্লেখ করে এরশাদ উল্লাহ জানান, তার স্ত্রী, ছেলে এবং ছেলের স্ত্রী বাসায় ছিলেন। ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস এবং পাঁচলাইশ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

এছাড়া চট্টেশ্বরী রোডে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের বাসায়ও হামলা করা হয়। তার দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বাইরে থাকা সোফায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

মীর নাছিরের বাসায় হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ছেলে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন আজাদীকে বলেন, ছাত্রলীগযুবলীগের লোকজন আমাদের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। বাড়ির ভেতর ঢুকতে পারেনি। ঢোকার জন্য বাসায় দরজায় কুপিয়েছে। জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। বাসার সামনে থাকা দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এর মধ্যে একটি পাজেরো ও একটি প্রাডো ছিল। ওই সময় বাবা বাসায় ছিলেন।

মীর নাছিরের পলিটিক্যাল সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, বাসার বাইরে বৈঠকখানার সোফায় আগুন দিয়েছে। বাইরে যে অফিস ছিল সেটাও সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছে। জানানোর পরও এখনো (রাত ১১টা) ঘটনাস্থলে পুলিশ আসেনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিক্ষামন্ত্রী ও মেয়রের বাসভবনে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর
পরবর্তী নিবন্ধনিউ মার্কেট মোড়ে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ আন্দোলনকারীদের