ইতিহাসের পাতায় পাতায় লেখা থাকবে বঙ্গবন্ধুর নাম

সুইটি চৌধুরী পূর্বা | বুধবার , ৩১ জুলাই, ২০২৪ at ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ

যাঁর অগ্নিমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাঙালি জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, আর স্বাধীনতার স্বাদ লাভ করেছেন, তিনি আর কেউ নন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালির শোকের মাস আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট রাতে মানবতার শত্রু, প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকচক্রের হাতে বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলনের এই মহানায়ক, লাঞ্ছিত, বঞ্চিত নিপীড়িত মানুষের মহান নেতা, বাঙালির প্রেরণার উৎস, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এদিন আমাদের জাতীয় শোক দিবস। বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন। কেবল মৃত্যুর মাঝেই মহৎ মানুষের জীবন ফুরিয়ে যায় না, যতদিন এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে সমুজ্জ্বল হয়ে থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধুর অমরকীর্তি থাকবে বহমান ধারায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে, যুগ থেকে যুগান্তরে শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির বাতিঘর হয়ে থাকবেন। বঙ্গবন্ধু রাজনীতির কবি। যাঁর ইচ্ছা ছিল শোষণহীন, বঞ্চনাহীন, অসম্প্রদায়িক সমাজ গড়ার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশের শোষণ পীড়িত, নিপীড়িত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম আন্দোলন করেছেন, কারাবরণ করেছেন, তাই তিনি রাজনীতিতে ছিলেন বিদ্রোহী। গণমানুষের মুক্তির আন্দোলনের কথা বলে বার বার কারা বরণ করতে হয়েছে তাঁকে। তিনি মহাননেতা। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার কয়েকদিন পর ২৫ মার্চ তাঁকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী গ্রেফতার করে। জাতি, ধর্ম ভেদাভেদের বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলেন এই মহান নেতা বঙ্গবন্ধু। তাই তাঁর দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষিত হয়, বাঙালি অবাঙালি, হিন্দু মুসলমান সবাই আমাদের ভাই। তাদের রক্ষা দায়িত্ব আমাদের। তাই ১৯৭১ সালে রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, মানুষের অধিকার চাই’। তাঁর স্মৃতি মহাকালের কীর্তি অমর, অজয়, অক্ষয়। এই অকুতোভয় বীর, বিশ্ববরেণ্য সংগ্রামী নেতা, জাগ্রত চেতনার বহ্নিশিখা বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে দিয়েছেন একটি স্বাধীন দেশ, একটি লাল সবুজের বিজয় পতাকা, দিয়েছেন বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি দেশের নাম এবং সমগ্র বিশ্বে বীর বাঙালি জাতিকে সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সম্মান। তাই তাঁর জাতিসত্তা বাঙালিত্বের চেতনায় এ দেশের সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে সেদিন জাগ্রত করেছিলেন। এই মহান নেতা আজীবন ভালোবেসেছেন বাংলার মাটি মানুষ, নদী সাগর, পাহাড় পর্বত, মুক্ত আকাশ, বাউল বাতাস আর অবারিত সবুজ মাঠ। বঙ্গবন্ধুই আজ স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার এবং বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। বঙ্গবন্ধু মাত্র ৫৫ বছরের জীবনে যে ঐতিহাসিক অবদান রেখেছেন, তা ইতিহাসে কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে। ইতিহাসের পাতায়, পাতায় লেখা থাকবে চির অম্লান বঙ্গবন্ধুর নাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৃজনে ও মননে স্মরণীয়
পরবর্তী নিবন্ধ‘বাঙালির ধ্রুবতারা বঙ্গবন্ধু’ : প্রশংসাযোগ্য আয়োজন