নগর বিএনপির আরো ১০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সোমবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত নগরের বিভিন্ন থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। এই নিয়ে গত ১৬ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত দলের ৩৯০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নগর বিএনপির এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়। এতে ‘বৈষম্যবিরোধী শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনকে’ কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। বিবৃতিদাতারা হচ্ছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান। তারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে পুলিশের অভিযানে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের বাসায় পুলিশ গিয়ে হয়রানি করছে। এলাকা ভাগ করে পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য বাহিনী ‘ব্লক রেইড’ ও নির্বিচারে আটক করে নেতাকর্মীদের নিয়ে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন মামলায় তাদের আসামি করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার পুলিশকে দিয়ে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে উদ্ভট মামলা করেছে। এসব মামলা পরিকল্পিত ও মিথ্যা। সরকার দলীয় লোকজন পরিকল্পিতভাবে একেকটি ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির নামে মামলা দিচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে কব্জায় নিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে প্রশাসন যন্ত্রকে তাদের অবৈধ ক্ষমতায় টিকে থাকার খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের কর্মীরা নজীরবিহীন দমন পীড়নের তাণ্ডব চালিয়েছে। শুরু থেকেই এই ছাত্র আন্দোলনকে সরকারি দল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করতে চেয়েছে। সরকারের একাধিক মন্ত্রী চরম দায়িত্বহীন ভাষায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছে। দেশের বেসামরিক নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দমনের জন্য কারফিউ জারি করে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং হেলিকপ্টার থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজীরবিহীন।
বিবৃতিতে বলা হয়, এত অল্প সময়ে কোনো একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দুই শতাধিক মানুষ হত্যার নজির ইতিহাসে নেই। এই বিপুল প্রাণহানির দায় সরকারের। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে সরকার হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে পারবে না। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পাশ কাটিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের অপরাধ ঢাকা যাবে না। ছাত্র জনতার উপর হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনার কোনো তদন্ত না করে কেবল নাশকতার মামলা দায়েরের মাধ্যমে হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা লোককে আসামি করা ও কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তারের ঘটনা অত্যন্ত নিপীড়নমূলক। অবিলম্বে সাধারণ মানুষ হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বিবৃতিতে চট্টগ্রামে অবিলম্বে গণগ্রেপ্তার বন্ধ এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ ইতঃপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার করে হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।