এক সপ্তাহে আনোয়ারায় অজ্ঞাত রোগে ১০ মহিষের মৃত্যু হয়েছে। এতে খামারিদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত ১ সপ্তাহে উপজেলার বারশত ইউনিয়নের পারকির চরে ৭ খামারির ১০ মহিষ মারা যায় বলে খবর পাওয়া যায়। গতকাল সকালে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়ার নেতৃত্বে বিশেষ টিম পারকির চরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রোগ নির্ণয়ের (ময়না তদন্ত) জন্য ঢাকাস্থ প্রাণীসম্পদ বিভাগের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য মৃত মহিষের শরীরে নমুনা সংগ্রহ করেছে।
জানা যায়, অজ্ঞাত রোগে জাহাঙ্গীর আলমের ২টি, সেকান্দর হোসেনের ২টি, মো. এরফানের ১টি, মো. বাবুর ২টি, নুরুজ্জামানের ১টি, নাসির সওদাগরের ১টি, আনোয়ার হোসেনের ১টি করে মহিষ মারা গেছে। খামরিরা জানায়, গত ১ সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করেই ১ থেকে ২ বছর বয়সী মহিষের গায়ে জ্বর আসে, মুখ দিয়ে লালা পড়তে পড়তে হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
সরেজমিনে গতকাল সোমবার উপজেলার পারকি দুধকুমড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ৩টি মহিষ মৃত অবস্থায় পড়ে আছে, ১টি সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আরেকটি মহিষকে চরে গর্তে করে পুঁতে ফেলা হচ্ছে। এসময় ঘটনাস্থলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া, উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দোলন কান্তি দাশ, মো. জসিম উদ্দিন, মো. ইয়াসিনকে দেখা যায়।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতির পর স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা তাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের জানানোর পরও গত দুই দিন ধরে কোন কর্মকর্তা অসুস্থ মহিষের চিকিৎসায়এগিয়ে আসেনি। প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না করার কারণে খামারিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারি মো. এরফানের অভিযোগ, চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে মহিষে এই রোগের দেখা মিললেও উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের জানানোর পরও তারা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করেনি, এতে খামারিদের মাঝে ক্ষোভ রয়েছে। তিনি বলেন, মৃত মহিষ গুলোর মাঝে হঠাৎ জ্বর এসে ধরফর করতে করতে মারা যায়। বর্তমানে আরো অর্ধ শতাধিক মহিষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মারা যাওয়া মহিষ গুলোর মূল্য ১ লক্ষ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন, সোমবার সকালে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মেডিকেল টিম পারকি এলাকায় গিয়ে মৃত মহিষের পোস্টমর্টেম করে ল্যাবে পাঠিয়েছি। গতকাল থেকে সকাল বিকাল দুই বার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা মহিষের চিকিৎসা পর্যবেক্ষণ করবেন। আজ থেকে জেলা অফিসের টিম এসে পর্যবেক্ষণে যাবেন। ময়না তদন্তের রিপোর্টের পর রোগ নির্ণয় সম্ভব হবে। তার আগে আমরা মহিষের চিকিৎসার বিষয়ে খামারিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।