সাপের সন্ধানে ছুটে তারা, সাপের সাথে সন্ধি

| বুধবার , ২৪ জুলাই, ২০২৪ at ৩:৩৮ অপরাহ্ণ

বিষধর সাপ কিং কোবরা কিংবা বাক্সবন্দি অবস্থায় থাকা বিষাক্ত পদ্ম গোখরের ডিম থেকে উৎপাদিত সাপের ছানা, অপেক্ষায় আছে অভায়রণ্যে মুক্তির স্ন্যাক রেস্কিউ টিম বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে থাকা প্রতিটি সাপেরই গন্তব্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল, যা নিশ্চিতে কাজ করছে সংগঠনটি। মূলত সাপ নিধন রোধ ও পরিবেশে সরীসৃপ গোত্রের এই প্রাণীটির ভারসাম্য বজায় রাখার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে স্ন্যাক রেস্কিউ টিম বাংলাদেশের সদস্যরা। প্রাকৃতিকভাবে নিরীহ প্রজাতির প্রাণী সাপ প্রচলিত কুসংস্কার ও নানাবিধ কারণে সমাজে মানুষের কাছে আতঙ্ক ও ভীতিরই অপর নাম। এর ফলে সাপ নিধনে উৎসাহিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

তবে পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া ২৯০০ প্রজাতির সাপের ভিতর বিষাক্ত কিংবা বিষধর সাপের সংখ্যা খুবই নগণ্য। সাপের এই বিষ প্রয়োগ শুধুমাত্র আত্মরক্ষা এবং শিকার ঘায়েলে। তাই সাপ সমপর্কে সচেতনতা তৈরীতে কাজ করছে স্ন্যাক রেস্কিউ টিমের সদস্যরা জানিয়েছেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা সদস্য সিদ্দিকুর রহমান রাব্বি। তিনি জানান, সাপ নির্মূল রোধে কাজ করছে সংগঠনটি। এছাড়া সাপ লোকালয়বাসা বাড়িতে ঢুকে পড়লে সাপ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সাহায্য নিয়ে থাকে। আমরা উদ্ধারের পর তা অভয়ারণ্যে মুক্ত করে থাকি। একাজটি গত ৯ বছর ধরে করে আসছি আমরা। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রাণীটি ভূমিকা অপরিহার্য। বিষাক্ত সাপের বিষ থেকে যেমন তৈরী হচ্ছে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ঠিক তেমনি শস্যখেতে কৃষকের বন্ধু পরিচয়ে ফসল রক্ষায়ও রাখছে প্রাণীটি। কালো ডোরা কাটা একটি সাপ দেখিয়ে রাব্বি জানান, সাপটি উদ্ধার করা হয়েছে ধানক্ষেত থেকে। ধানক্ষেতে সাপটি দেখতে পেয়ে কৃষকরা আমাদের জানালে আমরা গিয়ে এটি উদ্ধার করি। পাশাপাশি উপস্থিত কৌতূহলী মানুষকে জানায় পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা সমপর্কে। মূলত এ ধরনের সাপ ধানক্ষেতে থেকে পোকা মাকড়, ইদুর খেয়ে শস্য রক্ষা করে সমাজে সাপকে ঘিরে থাকা প্রচলিত ভুল ধারণা ভেঙে সচেতনতা তৈরী এবং বিষাক্ত সাপের কামড়ে মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্ন্যাক রেসকিউট টিম বাংলাদেশের সদস্যরা। সংগঠনটির অপর সদস্য ফরহাদ আসিফ জানান, সাপ রক্ষায় কাজ করতে গিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের। তবে উদ্ধার শেষে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরী করে পরিবেশে সাপের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সক্ষম হলেই আনন্দ পান তারা। মূলত সাপ উদ্ধারের পর নিজস্ব তত্ত্বাবধান কিংবা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় পুনরায় অভয়ারণ্যে ফেরত পাঠানোর কাজ করে আসছে তারা দীর্ঘদিন ধরে। পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এবং প্রকৃতিতে প্রাণীটির অস্তিত্ব বজায় রাখতেই তাদের এ প্রয়াস। পাশাপাশি দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সাপ নির্মূল সমপূর্ণ নিষিদ্ধ বার্তাটি জানাতে এবং বিষধর ও বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে নিজেদের বাঁচাতে সরকারি হাসপাতালে সংরক্ষিত এন্টি ভেনম গ্রহণে জন্য জনসাধরণকে উৎসাহিত করছেন তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়কের পাশেই ফেলা হচ্ছে সরকারহাট বাজারের ময়লা, ভোগান্তি
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডের কচু ফুল যাচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে