জ্বালাও–পোড়াও এবং ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দারুল ফজল মার্কেট নগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ১৪ দলের জরুরি সভায় এ আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ। চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে এবং জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জসিমুদ্দিন বাবুলের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের একটি অহিংস কোটা আন্দোলনকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সহিংস আন্দোলনে রূপদানের মাধ্যমে দেশব্যাপী নৈরাজ্য ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিএনপি, জামায়াত–শিবিরসহ স্বাধীনতাবিরোধী চক্র। মূলত কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত–বিএনপি–শিবির মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করে। ধারাবাহিকভাবে জ্বালাও–পোড়াওয়ের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস করে চক্রটি। তাই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এ চক্রকে যেকোনো মূল্যে বিনাশ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে। সরকারের ত্বরিৎ সিদ্ধান্তে ষড়যন্তকারীরা পিছু হটলেও তারা বসে নেই। তারা যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে। তাদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলার এখনই সময় বলে উল্লেখ করেন ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনাশী শক্তির বিরুদ্ধে সকল প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণকে জাগিয়ে তুলতে হবে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের ঐতিহাসিক রায় প্রদান করায় মহামান্য সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি সরকার সুপ্রিম কোর্টে কোটা বাতিলের মামলার শুনানির তারিখ এগিয়ে আনা, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি এবং কারফিউ প্রদানের মধ্য দিয়ে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। যারা জ্বালাও–পোড়াও এবং অগ্নিসংযোগ করেছে তাদেরকে দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে শাস্তি দানের আহবান জানান নেতৃবৃন্দ। কোটা আন্দোলন নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিজয় যাতে অন্য কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে সেজন্য শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ১৪ দল সরকারের পাশে থেকে গরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করায় কেন্দ্রীয় ১৪ দলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুততার সাথে পদক্ষেপ গ্রহণ করায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, এবিপিএন, আনসারসহ সকল সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন ১৪ দল নেতৃবৃন্দ।
সভার শুরুতে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানির ঘটনায় নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ। এছাড়া যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতিও গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, এই কয়েকদিন স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত–শিবির ও বিএনপির জ্বালাও–পোড়াওয়ের ঘটনায় কারফিউ চলাকালে নিম্ন আয়ের লোকজন যারা কষ্টে আছে তাদের এলাকাভিত্তিক ১৪ দলের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আর যেসব এলাকায় গার্মেন্টসসহ শিল্প কারখানা চালু হয়েছে সেখানে ১৪ দলসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোকজনকে নিয়ে আমরা সতর্ক পাহারায় থাকব।
এ সময় বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, ন্যাপ কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য গাজী মো. আলমগীর কবির, মহানগর আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও কাউন্সিলর হাসান মাহমুদ হাসনী, জেলা পিপি এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মসিউর রহমান চৌধুরী, জামশেদুল আলম চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেলায়েত হোসেন, এটিএম জাফরুল আলম, গণআজাদী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাওলানা নজরুল ইসলাম আশরাফী, মিটুল দাশগুপ্ত, ন্যাপ মহানগর সভাপতি বাপন দাশগুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উল্লাহ মজুমদার, সমীরণ দাশ, গণআজাদী লীগ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম, জাতীয় পার্টি (জেপি) মহানগর সভাপতি মো. জসিম উদ্দীন, সাম্যবাদী দল মহানগর আহ্বায়ক অমূল্য বড়ুয়া, ত্বরীকত ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক কাজী আহসানুল মোর্শেদ কাদেরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য দিদারুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।