চট্টগ্রামের খেলাধুলার এক সময়ের সুতিকাগার রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠ। এই মাঠে কতটি দল যে অনুশীলন করতো তার কোনো হিসেব নেই। অনেক নামিদামী টুর্নামেন্ট হয়েছে এই মাঠে। কিন্তু এখন সেই মাঠটি খেলাধুলার একেবারেই অনুপযোগী। বছরের বেশিরভাগ সময় এই মাঠ মেলার জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। শুধু যে মেলা তা কিন্তু নয়। মেলা ছাড়াও বড় বড় জনসভাও হয় এই মাঠে। ফলে এর আশেপাশে যেসব ছেলেমেয়েরা রয়েছে তাদের খেলার সুযোগটা একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। দেশে এখন চলছে কারফিউ। চারদিকে সবকিছু বন্ধ। ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় ছেলেমেয়েরা মোবাইল ফেলে মাঠে নেমে পড়েছে। পাড়া–মহল্লা, অলিগলি সব জায়গায় সমানে খেলছে শিশু–কিশোররা। গতকাল নগরীর প্যারেড মাঠ থেকে শুরু করে জমিয়তুল ফালাহ মাঠ, মহসিন কলেজ মাঠ, অভয়মিত্র ঘাটস্থ বালুর মাঠসহ সবগুলো মাঠে শিশু–কিশোরদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়।
কিন্তু ব্যতিক্রম পলোগ্রাউন্ড মাঠ। এই মাঠটিতে খেলতে নামতে পারছে না শিশু–কিশোররা। কারণ এই মাঠটি এখন আর খেলাধুলার উপযোগী নেই। গতকাল দেখা গেছে রেলওয়ে ওয়াজিউল্লাহ মাঠে কিছু ছেলে খেলছিল। কিন্তু পলোগ্রাউন্ডে খেলতে পারছে না তারা। মাঠের মাঝখানেই শুধু নয় পুরো মাঠ জুড়ে রয়েছে বিশাল বিশাল ময়লাযুক্ত বালির স্তূপ। তাছাড়া মাঠের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা ময়লা। মাঠের বিভিন্ন অংশে পড়ে রয়েছে ভাঙা ইট। বলা যায় খুব হতশ্রী একটা অবস্থা এখন মাঠটির। তাই এই মাঠে খেলতে পারছে না শিশু–কিশোররা। গতকাল মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকজন শিশুর সাথে কথা হয়। তারা জানায়, এই মাঠে খেলাটা এখন বেশ ঝুঁকির। কারণ যেকোনো সময় যে কেউ আহত হতে পারে। এই মাঠে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেশি। মাঠের সব জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইটের টুকরো। আর ময়লা আবর্জনা তো রয়েছেই। তাই তারা খেলতে সাহস পাচ্ছে না। ফলে এমন কঠিন সময়েও খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিশু–কিশোররা। তারা চায় অন্তত মাঠটি কোনোমতে খেলাধুলার করার উপযোগী হোক। যাতে তারা অন্তত বিকেলটাতে খেলতে পারে। কারণ রাস্তায় খেলাটা আরো ঝুঁকিপূর্ণ। রাস্তায় খেলতে গেলে বল কোথায় যায় সেটা ঠিক থাকে না। তাই মাঠে গিয়েই খেলতে চায় শিশু–কিশোররা। রেলওয়ের বিভিন্ন কলোনী এবং আশেপাশের বিশাল এলাকার অনেক ছেলে এই মাঠে খেলে থাকে। এখনো খেলতে চায়। কিন্তু মাঠটি ইট পাথরে ভরা থাকায় এখন সে মাঠে খেলার সাহস পাচ্ছে না তারা। তাই যত দ্রুত সম্ভব অন্তত মাঠটাকে খেলার উযোগী করে তোলার আকুতি এই সব কোমলমতি শিশু–কিশোরদের। কিন্তু কে জানে তাদের সে আকুতি কর্তাদের কর্ণ কুহরে প্রবেশ করে কিনা।