বিনোদন পিয়াসীদের প্রিয় ঠিকানা রাঙ্গুনিয়ার শেখ রাসেল অ্যাভিয়ারী এন্ড ইকোপার্ক। এটি বাংলাদেশের একমাত্র পাখিশালা। এই পাখিশালায় দেশীয় প্রজাতির পাখির পাশাপাশি রয়েছে আফ্রিকান পলিক্যান, ইলেকট্রাসপ্যারট, সোয়ান, রিংন্যাক, ম্যাকাউ, টার্কি, শকুনসহ হরেক রকমের পাখি। রয়েছে আকর্ষণীয় হরিণ। পাশাপাশি এই পার্কে রয়েছে দেশের দীর্ঘতম ক্যাবল কার। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে পার্কে পর্যটকের আনাগোনা কমলেও বৃষ্টিতে সজিবতা ফিরেছে পক্ষিশালার চারশো নানা প্রজাতির পাখির। বৃষ্টির ছোঁয়ায় এই পক্ষিশালার ময়ুর পেখম মেলছে, বিশালাকার খাঁচায় ডানা ঝাপটিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে পক্ষিকুল। তাদের বিচিত্র সব কিচিরমিচির ডাকে মুখর হয়ে ওঠেছে পক্ষিশালা। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে এমন চমৎকার চিত্রের দেখা মেলেছে বিনোদন পার্কটিতে। সম্প্রতি পার্কটিকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে শত কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, ২০১০ সালে পার্কের উদ্বোধন হলেও ক্যাবল কার সংযোজন হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। এই পার্কে ক্যাবল কার রয়েছে ১২টি। একেকটি ক্যাবল কারে যাত্রী উঠতে পারেন ছয়জন করে। ভূমি থেকে প্রায় ১০০ ফুট উপর দিয়ে যাতায়াত করে এই ক্যাবল কার। ক্যাবল কারে চড়ার সময় পথে পথে রয়েছে ছোট হৃদ, কয়েকটি উঁচু–নিচু পাহাড়, ধানক্ষেত আর পার্কের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। যাওয়া–আসা মিলে আড়াই কিলোমিটার পথ ২০ মিনিটে পাড়ি দেয়া যায়।
পার্কের দায়িত্বশীলরা জানান, পার্কে ক্যাবল কারের পাশাপাশি রয়েছে ৮টি খাঁচায় চারশত নানা প্রজাতির দেশি–বিদেশি পাখি। প্রবেশমুখেই অভ্যর্থনা জানাবে কথা বলতে পারা ময়না। বৃষ্টি এলেই পক্ষিকূলে সজিবতা ফিরে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
মো. ওয়াহিদুজ্জামান সুমন নামে এক ব্যাংকার জানান, পার্কে সুন্দর প্রাকৃতিক পাহাড়ি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে। শত শত পাখির কিচিরমিচির শব্দে প্রাণ ভরে যায়। সাথে ক্যাবল কারে চড়ে এই পাহাড় থেকে ওই পাহাড়ে উড়ে বেড়ানো যায়। সবমিলিয়ে প্রাকৃতিক নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটানোর এক অসাধারণ জায়গা শেখ রাসেল পার্ক। তবে এটিকে আরও পরিচ্ছন্ন করাসহ আধুনিকায়ন করা জরুরি।
এদিকে পার্কের আরও উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের কাজ করা হচ্ছে বলে জানান পার্কের দায়িত্বে থাকা রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান। তিনি বলেন, প্রবেশপথের গেটটিকে আরও আধুনিকায়ন করে গড়ে তোলা হচ্ছে। লেকে পানির ফোয়ারা করা হচ্ছে। এভাবে পার্কটিকে আরও আধুনিকায়ন ও আকর্ষণীয়ভাবে করে গড়ে তোলার জন্য আরও বিভিন্ন অবকাঠামো, পিকনিক জোন আধুনিকায়ন, নানা ইভেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বৃষ্টি এলেই ব্যতিক্রমী সাদা ময়ুরসহ ময়ুরদলের আকর্ষণীয় ডাক, পেখম মেলার দৃশ্য, দেশি–বিদেশি পাখির উড়ে বেড়ানো কিচিরমিচির ডাক যে কাউকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। পার্কের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম শেষ হলে এটি বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্রে রূপ নেবে। তিনি দর্শনার্থীদের পার্কে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।