একগুচ্ছ নাগরিক সমস্যার সমাধান চাইলেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল শনিবার বিকেলে সুজন উত্তর কাট্টলীস্থ তার বাসভবনে নাগরিক উদ্যোগের এক সভায় নাগরিক সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং সমস্যাগুলোর সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।
এ সময় সুজন বলেন, চট্টগ্রামে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আবেদনকারীদের। জেলা নির্বাচন অফিসে এনআইডি সংশোধনের জন্য আবেদনকারীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগীদের মতে বর্তমান সময়ে এনআইডি সংশোধনের মতো আর কঠিন কোন কাজ হতে পারে না। এমতাবস্থায় এনআইডি সংশোধন প্রক্রিয়াটি সহজতর করার জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন জনবান্ধব কর্মসূচি ভন্ডুল করতে তৎপর এক শ্রেণির অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী। কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই একেক দিন একেকটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ ভোক্তা একেবারেই অসহায়। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেশ চড়া। ফলে নতুন করে চালের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে। এ অবস্থায় চালের বাজারে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে চাহিদার তুলনায় অধিক পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও প্রাপ্তির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বঞ্চিত হচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন শিল্প–কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে এর প্রভাব গিয়ে পড়ছে জাতীয় অর্থনীতির উপর। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়লেও সম্প্রতি লোডশেডিংয়ের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই চট্টগ্রামের প্রাপ্যতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সুজন।
ওয়াসার ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্পের (১ম পর্যায়)’ আওতায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পাইপ লাইন স্থাপন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সুজন বলেন, এসব পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য নগরীর অলিগলির রাস্তা কর্তন করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় মোট রাস্তার অর্ধেক অংশ ঘেরা দিয়ে রাস্তা কর্তন কিংবা অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হচ্ছে। এর ফলে দীর্ঘসময় যানজটে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। আবার এসব যানজট অলিগলি পেরিয়ে মূল সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। তাই ওয়াসাকে জনভোগান্তি মাথায় রেখে প্রকল্পের কাজ শেষ করার অনুরোধ জানান সুজন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে শব্দ দূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে মাইকের যত্রতত্র ব্যবহারে জনজীবন অতিষ্ঠ। মাইকের উচ্চস্বরের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে। এমনকি গভীর রাত অবধি অবাধে মাইক বাজানো হচ্ছে। প্রশাসন এসব বিষয়ে কঠোর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দিনের পর দিন মাইকের উৎপাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই শব্দ দূষণ বন্ধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াছ, মো. সিরাজ, আব্দুর রহমান মিয়া, সদস্য সচিব মো. হোসেন, মো. শাহজাহান, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, শিশির কান্তি বল, অধ্যক্ষ কামরুল হোসেন, হাফেজ ওকার উদ্দিন, মো. সেলিম, অনির্বাণ দাশ বাবু, সোলেমান সুমন, মো. জাহাঙ্গীর প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি