এইচএসসি পরীক্ষায় রুটিন অনুযায়ী বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্রের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের মাঝে দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের বিজয় সরণি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর আবার পরীক্ষা শুরু হয়।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, পরীক্ষার্থীদের ভুলবশত পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্রের বদলে দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন দেওয়া হয়। পরে পরীক্ষকরা প্রশ্ন তুলে নেন। আবার জেলা প্রশাসনের ট্রেজারি থেকে প্রথম পত্রের প্রশ্ন এনে পরীক্ষা শুরু করা হয়। পরীক্ষা শুরু হয় দুপুর ১২টার দিকে। মূলত জেলা প্রশাসন ও কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ভুলে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, পরীক্ষার শুরুতে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়। প্রশ্ন হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হৈচৈ পড়ে যায়। পরে প্রশ্নপত্রটি তুলে নিয়ে পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়। এ ঘটনার ২ ঘণ্টা পর প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে পুনরায় পরীক্ষা শুরু হয়।
বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ এম এম মুজিবুর রহমান বলেন, সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথমে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নে পরীক্ষা হয়েছে। ২৫ মিনিট এ পরীক্ষা চলে। তারপর সৃজনশীল প্রশ্ন বিলি করা হয়। তিনি বলেন, পরীক্ষার প্রশ্ন জমা থাকে জেলা প্রশাসনের ট্রেজারি শাখায়। সেখানে পরীক্ষার তিন দিন আগে পরীক্ষা অনুযায়ী কোড মিলিয়ে প্রশ্ন ঠিক করে রাখা হয়। পরে পরীক্ষা শুরু আগে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঠিক প্রশ্নটি নিয়ে যান। ফলে প্রশ্ন রাখা অথবা নেওয়ার সময় ভুল হতে পারে।
বোর্ড চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, সূচি অনুযায়ী আগামী রবিবার পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে ওই পরীক্ষার প্রশ্ন আগাম বিলি করায়, তা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড। বিকল্প প্রশ্নপত্রে দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা হবে।
এদিকে ভুল প্রশ্ন দেওয়ার ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সাদি উর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন তাঁরা।
একই ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা ১ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন। এদিকে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের বিষয়ে কেন্দ্র সচিব ভাটিয়ারী বিজয় সরণি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রিন্সিপাল শিব শংকর শীল কোনো মন্তব্য করেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা আলম সরকার বলেন, পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করার দায়িত্ব থাকে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র সচিবের। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারি থেকে প্রত্যেক কেন্দ্র সচিবকে বা তাদের প্রতিনিধিকে প্রশ্নপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ইউএন রফিকুল ইসলাম বলেন, কার ভুলে এই ঘটনা ঘটেছে তদন্ত করে দেখা হবে।