বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর মধ্যে সবচেয়ে সমৃদ্ধ ঋতু হলো বর্ষা। বর্ষাকে প্রকৃতির রাণী বলা হয়ে থাকে। বর্ষার রূপ, রস, সৌন্দর্যে প্রকৃতি সজীব হয়ে ওঠে। শিল্পরসিক মন বর্ষার আহ্বানে অভিভূত হয়ে যায়। মনের গতিপ্রকৃতিও তখন কেমন যেনো কাব্যময় হয়ে ওঠে। টাপুর টুপুর বৃষ্টির দিনে বর্ষার গান যখন বেজে ওঠে তখন অন্যরকম একটা মোহমায়া কাজ করে। বর্ষা প্রকৃতিকে সতেজ, সিগ্ধ, কোমল করে তোলে। মরা নদ–নদী, পুকুর–ডোবা, জলাশয় নব আনন্দে জেগে ওঠে। হারানো রূপ, যৌবন পুনরায় ফিরে পায়। প্রাণ ফিরে পায় সবুজ প্রকৃতি। বৃষ্টির পানিতে সবুজ বৃক্ষরাজি আরো সবুজ ও সুন্দর হয়ে ওঠে। টিনের চালে বৃষ্টির টাপুর টুপুর শব্দে মন উদাস হয়ে যায়। বর্ষা সবুজ পাহাড়ের সৌন্দর্যকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
বর্ষায় বাহারি রঙের সুগন্ধি ফুল সবার নজর কাড়ে। বর্ষায় হরেক রকমের ফুল ফুটে। তাদের মধ্যে– কদম, কেয়া, জুঁই, চামেলি, জারুল, সোনালু, কলাবতী, রঙ্গন, কামিনী, বকুল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বর্ষার প্রধান আকর্ষণ হলো বৃষ্টিভেজা কদমের মনকাড়া সৌরভ। গাছে গাছে কদমের ডালে ফুটন্ত চমৎকার ফুল সবাইকে আকৃষ্ট করে।
আমাদের সংস্কৃতির সাথে বর্ষা ঋতু ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে। ধূলিময়, রুক্ষ–শুষ্ক প্রকৃতিকে ধুয়ে–মুছে সাফ করে দিতে বর্ষার জুড়ি নেই। কবিদের কল্পনায় বর্ষা এক অনিন্দ্য সুন্দর সৃষ্টি। বর্ষার কোমলতা মানুষের হৃদয়কে যেভাবে ছুঁয়ে যায় বাংলার আর কোনো ঋতু এভাবে ছুঁতে পারে না। বর্ষা ছাড়া প্রকৃতি তার পরিপূর্ণতা পায় না।