বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরাতে চীনের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার চায়নিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) চতুর্দশ জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিংয়ের নেতৃত্বে উচ্চ–পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকের আলোচনার বিষয় পরে ব্রিফিংয়ে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। খবর বাসসের।
জানা যায়, সিপিপিসিসির প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার শেখ হাসিনার সঙ্গে তার অবস্থানস্থলে বৈঠক করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাড়ে ছয় বছর ধরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কোনো উদ্যোগ এখনও নেওয়া হয়নি। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সহায়তা করুন। পরে চীনের প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে এ ব্যাপারে তারা সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন। মিয়ানমারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার আশ্বাস দেন ওয়াং হুনিং। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট। রপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কঙবাজারের উখিয়া–টেকনাফে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ এখনই উপযুক্ত সময় : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনা ব্যবসায়ী সমপ্রদায়কে পারস্পরিক স্বার্থে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের প্রধান খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। বেইজিংয়ে ‘বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সুযোগ’ শীর্ষক এক শীর্ষ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের সময় এবং আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমাদের হাতে হাত মিলিয়ে একসাথে আমরা দুর্দান্ত কিছু অর্জন করতে পারি।’ প্রধানমন্ত্রী চীনা ব্যবসায়ী সমপ্রদায়কে বাংলাদেশের মূল খাতগুলো বিবেচনা করার জন্য উৎসাহিত করে বলেন, ‘আমরা আমাদের অবকাঠামো, জ্বালানি এবং লজিস্টিক খাতে বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই’।
তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে শ্রদ্ধা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে চীনা বিপ্লবী বীরদের স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয় এবং বিউগেলে করুন সুর বেজে ওঠে। বিকেলে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী চীনা বিপ্লবী বীরদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী এখানে এসে পৌঁছালে চীনা সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এর আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় সফরে গতকাল বেইজিং–এ এসেছেন।