ফ্রান্স-স্পেন দু’দলেরই লক্ষ্য ফাইনাল

স্পোর্টস ডেস্ক | মঙ্গলবার , ৯ জুলাই, ২০২৪ at ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ

ইউরোর দুই সাবেক চ্যাম্পিয়নের বর্তমান অবস্থা দুই রকম। দুরন্ত পারফরম্যান্স মেলে ধরা স্পেন ভাসছে প্রশংসার স্রোতে। আর বিবর্ণতায় বন্দি ফ্রান্স বিদ্ধ হচ্ছে সমালোচনার তীরে। এই দুই দল মুখোমুখি এবার। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে পিছু নেওয়া মলিনতার খোলস ছেড়ে তাই আড়মোড়া ভেঙে বেরিয়ে, সমালোচকদের মুখে ছিপি দিয়ে বার্লিনের ফাইনালে ওঠাই এখন একমাত্র লক্ষ্য দিদিয়ে দেশমের ফ্রান্সের। মিউনিখে আজ মঙ্গলবার ইউরোর প্রথম সেমি ফাইনালে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। স্পেনের সামনে হাতছানি এককভাবে ইউরোর সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। আর ২৪ বছরের খরা কাটিয়ে মুকুট ফিরে পেতে মরিয়া ফ্রান্স। তবে মাঠে সেরকম পারফরম্যান্স দেখাতে পারছেনা ফ্রান্স। আক্রমণভাগের মূল তারকা ও অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপে ধুঁকছেন। এ পর্যন্ত একবারই জালের দেখা তিনি পেয়েছেন পোল্যান্ড ম্যাচে । সেটাও পেনাল্টি থেকে। ‘ফেভারিট’ দলগুলোর একটি হয়ে জার্মানি এসে এখনও দলটি মেলে ধরতে পারেনি নিজেদের। সেরা চারের মঞ্চে উঠে এলেও তাই সমর্থক ও পন্ডিতদের সমালোচনা থামেনি। বরং দিনকে দিন বাড়ছে। দেশমের দলের সামনের পথচলা নিয়েও দানা বাঁধছে সংশয়, সন্দেহ। অথচ ফ্রান্স বিশ্বকাপের গত দুই আসরের ফাইনালিস্ট। ২০১৮ সালে রাশিয়ার আসরে চ্যাম্পিয়ন। ২০২২ সালে কাতারের টুর্নামেন্টের ফাইনালে টাইব্রেকার হেরে রানার্সআপ। তবে বিশ্বকাপ মঞ্চের আলোটুকু ফরাসিরা টেনে নিতে পারেনি ইউরোপ সেরার আঙিনায়। গত ১২ বছরের মধ্যে তাদের সেরা সাফল্য ২০১৬ সালে নিজেদের মাঠে ফাইনাল খেলা। সেবার পর্তুগালের কাছে হেরেছিল তারা।এদিকে স্পেন রয়েছে দারুন ছন্দে। ইউরোর স্বাগতিক জার্মানিকে হারিয়ে সেরা চারে উঠে এসেছে স্পেন। দানি ওলমোর লক্ষ্যভেদে পিছিয়ে পড়া জার্মানিকে ফ্লোরিয়ান ভিরৎজ শেষ মুহুর্তের গোলে সমতার স্বস্তি এনে দিয়েছিল। কিন্তু লুইস দে লা ফুয়েন্তের দলকে আটকানো যায়নি। ওলমোর সাজিয়ে দেওয়া আক্রমণ থেকে মিকেল মেরিনোর গোলে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় স্প্যানিশরা। টানা পাঁচ জয়ের তুঙ্গস্পর্শী আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামা স্পেনের বিপক্ষে ফ্রান্সকে তাই দিতে হবে অগ্নিপরীক্ষা। ‘পাস’ করতে হলে এমবাপে, গ্রিজমানদের বেরিয়ে আসতে হবে ছায়া থেকে। আদৌ তারা পারবে কিনা, এমন প্রশ্ন উঠছে জোরোশোরে। তবে মিডফিল্ডার ইউসুফ ফোফানা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দুই সতীর্থের সামর্থ্য নিয়ে একটুও সন্দিহান নন তিনি। ব্যক্তিগতভাবে আমি সমালোচনাকে থোড়াই কেয়ার করি। আমরা সেমিফাইনালিস্ট। অঁতোয়ান ও এমবাপের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? আমাদের উপলব্ধি করতে হবে যে, সেমিফাইনালে ওঠাও অনেক কিছু। নান্দনিকতার সাথে গতির মিশেলে দুর্বার গতিতে ছুটে চলা স্পেন অবশ্য কিছুটা অস্বস্তিতে আছে। জার্মানি ম্যাচে টনি ক্রুসের ট্যাকল সৃষ্টিশীল মিডফিল্ডার পেদ্রির খেলার সুযোগ শেষ করে দিয়েছে। কার্ডের নিষেধাজ্ঞায় দলটি পাবে না সেন্টারব্যাক রবিন লে ও নির্ভরযোগ্য ফুলব্যাক দানি কারভাহালকেও। সেক্ষেত্রে আইমেরিক লাপোর্ত ও হেসুস নাভাসের পাশে সেন্টারব্যাকে খেলবেন রিয়াল মাদ্রিদ ডিফেন্ডার নাচো। ১৬ বছর বয়সী উইঙ্গার লামিনে ইয়ামালের সাথে যোগসূত্রের কাজটি করতে হবে নাভাসকে। তবে ছোটখাট সমস্যা থাকলেও ফ্রান্স ম্যাচের জন্য যে দল পুরোপুরি প্রস্তুত, সে বার্তা প্রত্যয়ী কণ্ঠেই দিয়েছেন স্পেন কোচ। এটা সবার জাতীয় দল। একতাই শক্তি এবং যদি একই লক্ষ্যে আমরা ছুটতে থাকি, তাহলে আমরা আমাদের লক্ষ্যপূরণ করতে পারি। যদি আমরা সমর্থকদের সাথে সংযুক্ত হতে পারি, তাহলে আমার বিশ্বাস, সেটা আমাদের উদ্দীপনা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। ইউরোপের ফুটবলের এই দুই সুপার পাওয়ারের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ফাইনালের ঠিকানা কার সেটাই এখন দেখার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফুটবলের দল বদলের দ্বিতীয় দিনে উত্তাপ ছড়াল মুক্তিযোদ্ধা
পরবর্তী নিবন্ধনতুন গানে হাবিব ওয়াহিদ