সাঁতারে অনেক কিছু দেওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন মাহবুব-রুবেল

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ৮ জুলাই, ২০২৪ at ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

নদীমাতৃক এই দেশের সম্ভাবনাময় ক্রীড়া ইভেন্ট গুলোর মধ্যে সাঁতার একটি। এই ইভেন্টে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে অনেক পদক নিয়ে এসেছে বাংলাদেশের সাঁতারুরা। কিন্তু সবচাইতে বেশি নদী, খাল, বিল থাকলেও চট্টগ্রাম থেকে সেভাবে সাঁতারু উঠে আসেনি। বলা যায় সাঁতার একটি সম্ভাবনাময় ইভেন্ট হলেও চট্টগ্রাম অনেক পিছিয়ে এই সাঁতারে। অথচ এই চট্টগ্রামেই রয়েছে স্বতন্ত্র সুইমিংপুল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনেকগুলো সুইমিংপুল রয়েছে সারা দেশে। কিন্তু কেবল মাত্র চট্টগ্রামের পুলটি চালু রয়েছে। বেশিরভাগ সুইমিংপুল অচল হয়ে পড়েছে। এমন নিজস্ব সুইমিং পুল থাকা সত্ত্বেও কেন সাঁতারু উঠে আসছেনা চট্টগ্রাম থেকে তার কোন জবাব নেই। তবে এবারে সিজেকেএস সাঁতার কমিটির চেয়ারম্যান এবং সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া মাহমুদুর রহমান মাহবুব এবং রায়হান উদ্দিন রুবেল জানান অতীতের কথা বলতে পারবনা। তবে সামনে এই সাঁতার থেকে অনেক কিছু পাওয়ার দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। কারন চট্টগ্রামের আনাচেকানাচে অনেক সাঁতারু রয়েছে। তাদেরকে কেবল তুলে নিয়ে আসতে পারলেই হবে। তবে সে কাজটা করতে চান মাহবুব এবং রুবেল। গত দুই মেয়াদে সাঁতার কমিটির সম্পাদক ছিলেন মাহমুদুর রহমান মাহবুব। যদিও প্রতি বছরই লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাথে কিছু টুর্নামেন্টও হয়েছে। যদিও আরো অনেক কিছু করার দরকার ছিল । কিন্তু নানা কারনে করা হয়নি। তবে এবারে আর সে পথে হাটতে চাননা মাহবুব। কমিটিতে রায়হান রুবেলের সাথে রসায়নটা বেশ ভাল হবে বলেও মনে করেন মাহবুব। তাই নতুন করে শুরুরও প্রত্যাশা করেন এই অভিজ্ঞ ক্রীড়া সংগঠক। নিজেদের এত সুন্দর একটি পুল থাকা সত্ত্বেও সাঁতারু উঠে না আসাটা দুঃখজনক। তবে সে দুঃখজনক ঘটনার আর সাক্ষী হতে চাননা মাহবুব। কিভাবে সাঁতারু তৈরির লক্ষ্যে কাজ করা যায় সেটাই ভাবতে চান কমিটির সভাপতি। এবারের কমিটির সভাপতি এবং সম্পাদক দুজনেরই সাঁতার নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। মাহবুব দীর্ঘ আট বছর সাঁতার কমিটির সম্পাদক ছিলেন। রায়হান উদ্দিন রুবেল যুব গেমস সহ নানা জাতীয় প্রতিযোগিতায় সাঁতার দলের কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই তাদের পক্ষে কাজ করাটা সহজ হবে বলেও মনে করেন দুজন। সে সাথে কমিটিতে অন্য যাদের স্থান দেওয়া হয়েছে তাদের সাথেও রয়েছে দারুন মিল। তাই পুরো কমিটিটা সাঁতারের জন্য কাজ করতে উন্মুখ রয়েছে বলে জানান কমিটির সভাপতি এবং সম্পাদক।

প্রশিক্ষণ করানোটা চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার জন্য একটি সার্বজনীন বুলিতে পরিণত হয়েছে। মুখে প্রশিক্ষণের বিষয়ে কর্মকর্তারা মুখে ফেনা তুললেও কাজের কাজ আসলে কিছু হয়না। সেটা বুলিতেই থেকে যায়। তবে সাঁতার কমিটির সম্পাদক সেরকম বুলিতে সীমাবদ্ধ থাকতে চাননা। তিনি এই প্রশিক্ষণে একটু নতুনত্ব আনতে চান। যেহেতু শহরে সাঁতারু পাওয়া যাবেনা তাই তার দৃষ্টি গ্রামের দিকে। সেখান থেকেই তুলে আনতে চান সাঁতারু। দক্ষ সাঁতারু তুলে আনতে হলে গ্রামে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি। গ্রামীন পরিবেশে পানিতে সাঁতার কেটে বেড়ে উঠা ছেলেরা ভবিষ্যতে দক্ষ সাঁতারু হতে পারে। তাই তাদেরকেই টার্গেট করতে চান রুবেল। তিনি বলেন আমাদের যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে সেখান থেকে সাঁতারু বের করতে না পারাটা হবে দুঃখজনক। যেহেতু আমাদের দক্ষ সাঁতারু নেই তাই আমাদের নতুন করেই শুরু করতে হবে। হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। তবে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে এগুতে পারলে সাঁতার থেকে ভাল কিছু আশা করা মোটেও বাড়াবাড়ি হবেনা। নিয়মিত লিগ গুলো যেহেতু করতে হবে তাই সেগুলো করার পাশাপাশি নতুন কিছু যোগ করতে চান রুবেল। সেখানে থাকতে পারে স্কুল ছাত্র এবং ছাত্রীদের নিয়ে টুর্নামেন্ট। তবে একটি আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন তিনি। তা হচ্ছে এখনকার অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সাঁতার শেখানোর প্রতি বেশ আগ্রহী হচ্ছে। এই আগ্রহটা যদিও পানি থেকে বাঁচতে। তবে এখান থেকেও পাওয়া যেতে পারে সাঁতারু। সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে সাঁতার থেকে ভাল কিছু আশা করা যায় বলে মনে করছেন কমিটির সভাপতি এবং সম্পাদক। এই কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে ছয়জনকে। তারা হলেন আবু সুফিয়ান চৌধুরী ঝিনুক, আসলাম মোরশেদ, সিরাজুল ইসলাম, আবুদল কাদের, সুমন দে এবং মাহবুবুর রহমান সাগর। তিনজন যুগ্ম সম্পাদক হলেন আসাদুজ্জামান খান, ফারুখ আহমেদ এবং জসিমুল হুদা। সদস্যরা হলেন এ এস এম সাইফুদ্দিন চৌধুরী, জাফর ইকবাল, আজাদ রহমান, সোহেল আহমেদ, লিটন বড়ুয়া, আবদুল্লাহ আল মামুন, শাহজাহান আহমেদ সামি, এস এম মামুন, আহসান হাবিব ছোটন এবং ফজলে রব্বান সুইট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রিমিয়ার ফুটবলের দল বদলের নিরুত্তাপ প্রথম দিন
পরবর্তী নিবন্ধপ্রশংসায় ভাসছে সাধনের ‘মনে রেখো আমায়’