এ কী শুরু হলো এ দেশে? সোনার দেশের মানুষ তো এমন ছিলো না! আমরা বাঙালি তো এতোটাও ভীতু ছিলাম না যে নিজেদের জীবন নষ্ট করে দেবে। আত্মহত্যা করবে বাঙালি এ কথা কখনো শুনেছে নাকি কেউ? নাকি কেউ ভেবেছে? দিনের পর দিন সংগ্রাম করে যাওয়া এ জাতি স্বাধীনতার সন্ধানে থেকেছে। তাহলে আজ কেন এ মিথ্যে মুক্তির হাতছানিতে সাড়া দিচ্ছে এরা? বাবার টাকার সমস্যা থাকতেই পারে, তার জন্য সিলিং এ ঝুলে যেতে হবে? বাবা মা আলাদা থাকে, এ নিয়ে কেন তুমি এই পথে পা বাড়ালে? এ তো পাপ! নিজেকে মুক্ত করার আশায় সন্তানকে কিসের মাঝে রেখে গেলে তুমি, তা কিন্তু জানো না।
আত্মহত্যা এক পাপ। কিতাবে লেখা এ এক মহাপাপ। একজন মানুষ আত্মহত্যা করলে সে হয়তো মুক্তি পেয়ে যায়, কিন্তু তার পরিবার, তার বন্ধুরা, তার জীবন সঙ্গী পড়ে যায় বিপদে। অসহায় হয়ে পড়ে মা, বাবা, স্ত্রী, স্বামী, সন্তান। সমাজ তাদের জন্য হয়ে যায় বিষ। আমরাই চলে যাওয়া সেই মানুষের সাথে জড়িয়ে থাকা মানুষদের কোণঠাসা করে ফেলি। আমরা নিজেরাও জানি না আসলে কেন হচ্ছে এই যজ্ঞ। কেন হচ্ছে এ অপরাধ কিংবা ভুল সিদ্ধান্তের বহিঃপ্রকাশ।
আমরা বড্ড বেখেয়ালি। না রাখি নিজের খবর, না রাখি আমাদের সাথে জড়িয়ে থাকা জীবনদের খবর। আমরা আমাদের মাঝেই ডুবে থাকি। সত্য, অনবদ্য সত্য বা চিরন্তন সত্য যে এই সিদ্ধান্ত কখনোই যৌক্তিক ও কাম্য নয়।
নিজের পরিবারের খোঁজ রাখুন, তাদের সাথে থাকুন। মানসিকভাবে চাপে থাকা মানুষদের সঙ্গ দিন। ভালোবাসা, সাহস, অনুপ্রেরণা দিন। তাকে মানসিক চাপ না দিয়ে বরং মানসিক প্রশান্তি দিন, নিজেকে যেন বুঝতে পারে, তাতে সাহায্য করুন। আপনি সচেতন হলে একটা হলেও জীবন বাঁচবে। জীবনকে না থামিয়ে, এ মৃত্যুর মিছিল থামান। মনে রাখবেন, ‘সচেতনতাই পারে এ মৃত্যুর মিছিলকে থামিয়ে দিতে’।
রাশিদুজ্জামান রোহান,
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ,
সরকারি বাঙলা কলেজ, ঢাকা