ভারতের উপহারের অ্যাম্বুলেন্সপড়ে আছে অকেজো

কক্সবাজার সদর হাসপাতাল

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ৭ জুলাই, ২০২৪ at ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গের পাশে পড়ে আছে ভারত সরকারের দেয়া উপহার লাইফ সাপোর্টের সুবিধা সম্পন্ন একটি অ্যাম্বুলেন্স। লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স হলেও মূলত শুরু থেকে এটিতে ছিল না কোনো যন্ত্রপাতি। ফলে যান্ত্রিক সমস্যায় এটি এখনও অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এতে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে কোভিড মহামারির সময় উপহার হিসেবে বিশেষ এই অ্যাম্বুলেন্সটি পায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখান থেকে এটি গত ১৭ নভেম্বর ২০২১ সালে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে দেয়া হয়। যদিও অ্যাম্বুলেন্সটি চিকিৎসায় ব্যাপক অবদান রাখবে বলা হলেও এটি রোগী বহনে কোনো কাজে আসেনি। গত ৩ বছরে অ্যাম্বুলেন্সটি ভিআইপি ডিউটিসহ ১৪ বার ব্যবহার করা হয়েছে। বর্তমানে এটি কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গের পাশেই রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১ হাজার ৪০০ রোগী সেবা নেন। এটি ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও এখানে ভর্তি রোগী থাকে অন্তত ৪ থেকে ৫ শতাধিক। রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নেয়ার ক্ষেত্রে লাইফ সাপোর্ট সুবিধা সম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্সের খুব প্রয়োজন ছিল। বর্তমানে হাসপাতালে ১টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। কিন্তু সেটির অবস্থাও তেমন ভালো না। আর ভারত থেকে উপহার পাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটির গতি কম হওয়ায় পড়ে আছে।

এ বিষয়ে ওসমান গণি নামে এক রোগীর স্বজন জানান, কয়েকদিন আগে তার চাচার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু লাইফ সাপোর্ট সংযুক্ত কোনো অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে সাধারণ অ্যাম্বুলেন্সে চাচাকে নিয়ে তিনি ঢাকায় যেতে হয়েছে।

হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক আনোয়ার হোসেন জানান, ভারত থেকে উপহার পাওয়া লাইফ সাপোর্ট সুবিধা সম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্সটিতে কোনো যন্ত্রপাতি নেই। সাধারণত জরুরি ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্স ১০০ থেকে ১২০ কি. মি. গতিতে চালাতে হয়। কিন্তু এ গাড়িটির গতি হয় ৪০ থেকে ৪৫। তাই ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

হাসপাতালের মুখপাত্র ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশিকুর রহমান বলেন, লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স হলেও এর মধ্যে নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। এটি মেরামত করার চেষ্টাও আমরা চালিয়েছি কিন্তু সফল হয়নি। ফলে এটি নিয়ে আর কাক্সিক্ষত জরুরি সেবা দেয়া সম্ভব নয়। তবে গাড়িটি সচল রয়েছে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মং টিংঞো বলেন, লাইফ সাপোর্ট সুবিধা সম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্সটির খুবই প্রয়োজন ছিল। কিন্তু পরিপূর্ণ একটি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্সে যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তার কিছু নেই এটিতে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।

প্রয়োজনীয় লোকবল, যন্ত্রপাতি আর জ্বালানির অভাবে উপহার পাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি কোনো কাজে আসছে না। তাই বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে রোগীদের। এতে গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদীঘিতে পড়ে শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধনাফ নদীতে ট্রলার ডুবি, সাঁতরে বিজিপি সদস্য টেকনাফে