দুই পেনাল্টি রুখে আর্জেন্টিনাকে সেমিতে নিল মার্তিনেস

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ৬ জুলাই, ২০২৪ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

আর্জেন্টিনার গোলবারের নিচে অতন্দ্র প্রহরী এমিলিয়ানো মার্তিনেস। সেটা বারবার প্রমাণ করে যাচ্ছেন । আর তারই বীরত্বে আরো একবার কোপা আমেরিকা কাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিল আর্জেন্টিনা। খেলার নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মুহুর্তে গোল হজম, লিওনেল মেসির টাইব্রেকার মিস, সব মিলিয়ে কঠিন এক পরিস্থিতি থেকে দলকে সেমিফাইনালে নিয়ে গেলেন মার্তিনেস। হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় গতকাল শুক্রবার সকালে মূল ম্যাচ ড্র হওয়ার পর পেনাল্টি শ্যুটআউটে ইকুয়েডরকে ৪২ ব্যবধানে হারায় আর্জেন্টিনা। এর আগে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১১ সমতায় থাকে ম্যাচ। শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে মেসির নেতৃত্বেই খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে খেলতে থাকে শিরোপাধারীরা। কিন্তু আক্রমণে ছিল বেশ জড়তা। যেতে পারছিল না ইকুয়েডরের ডিবক্সের কাছে। উল্টো ষষ্ঠ মিনিটে থ্রেুাইন থেকে বল পেয়ে আর্জেন্টিনার বক্সে ঢুকে যান মোইসেস কেইসেদো। শেষ মুহূর্তে রদ্রিগো দে পলের চ্যালেঞ্জে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি তিনি। ২১ মিনিটে নিজেদের প্রথম সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। মেসি ডান পাশ থেকে দূরের পোস্টে খুঁজে নেন নিকোলাস গনসালেসকে। ঠিক মতো শট নিতে পারেননি এই ফরোয়ার্ড। ৬ মিনিট পর বাই লাইন থেকে বক্সের ভেতরে ক্রস দেন নাহুয়েল মলিনা। ভালো জায়গায় পেলেও হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি এনসো ফের্নান্দেস। ৩৪ মিনিটে ইকুয়েডরের আক্রমণ সামলে নিজেদের অর্ধ থেকে থ্রু পাস দেন মেসি। বড় সুযোগ পেয়ে যান এনসো। কিন্তু একমাত্র ডিফেন্ডারের শরীর বরাবর শট নেন এই মিডফিল্ডার। ওই কর্নার থেকেই গোল করে আর্জেন্টিনা। মেসির কর্নার কাছের পোস্ট থেকে ফ্লিক করে দূরের পোস্টে পাঠান মাক আলিস্তের। আলতো করে হেডে ফাঁকা জালে বল পাঠান লিসান্দ্রো মার্তিনেস। এগিয়ে যাওয়ার পর উন্নতি ঘটে আর্জেন্টিনার খেলায়। আরও ধারাল হয়ে ওঠে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের আক্রমণ। বিরতির আগে আরেকটি সুযোগ পান এনসো। দি পলের এগিয়ে দেওয়া বল বাম পায়ের শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। দূরের পোস্টে কাছাকাছি থাকলেও নাগাল পাননি লাউতারো মার্তিনেস। দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনার রক্ষণে চাপ দিতে থাকে ইকুয়েডর। অনেকটাই বিবর্ণ ফুটবল খেলতে দেখা যায় আর্জেন্টিনাকে। ৫৫ মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে এমিলিয়ানোর লম্বা ফ্রি কিক ফাঁকায় পেয়ে যান লাউতারো। কিন্তু বুক দিয়ে নামিয়ে বাম পায়ের শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। ৬০ কর্নার থেকে আসা বল দি পলের হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ভালেন্সিয়ার শটে বাম দিকে ঝাঁপ দেন এমিলিয়ানো। তবে বল লাগে ডান পাশের পোস্টে। অক্ষত থাকে আর্জেন্টিনার জাল। খেলা যখন শেষ মনে হচ্ছিল ঠিক তখনই আর্জেন্টিনার কপাল পুড়ে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে ইয়েবোয়ার ক্রসে ফ্লিক করে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে পাঠান কেভিন রদ্রিগেস। খেলায় ফিরে সমতা। পেনাল্টি শ্যুটআউটে প্রথম শট নেন মেসি। গোলরক্ষককে বোকা বানালেও তার শট ক্রসবারে লেগে চলে যায় বাইরে। আর্জেন্টাইনদের বেশিক্ষণ হতাশ থাকতে দেননি এমিলিয়ানো। বাম দিকে ঝাঁপিয়ে অ্যাঞ্জেল মেনার শট ঠেকিয়ে দেন তিনি। পরে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে আলান মিন্দার শটও ঠেকিয়ে দূর করে দেন সব উদ্বেগ। হুলিয়ান আলভারেস, আলেঙিস মাক আলিস্তের এবং দ্বিতীয়ার্ধের দুই বদলি গনসালো মন্তিয়েল ও নিকোলাস ওতামেন্দি জাল খুঁজে নিলে কঠিন ইকুয়েডর পরীক্ষায় উতরে যায় কোপা আমেরিকার শিরোপাধারীরা। চমক দেখানোর খুব কাছে গিয়েও কোয়ার্টারফাইনালেই বিদায় নেয় ইকুয়েডর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাশেম-বাবু দুজনেরই লক্ষ্য হকিটাকে স্কুল থেকে শুরু করা
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে ভাড়া বাসায় পোশাক শ্রমিক নারীর লাশ