চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার জিমনেসিয়াম ভবনটি বেশ পুরানো। এই ভবনটিকে ভেঙে নতুন করে বহুতল ভবন হিসেবে আধুনিক একটি জিমনেসিয়াম ভবনে পরিণত করতে চায় চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা। সে লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা গত ১৭ এপ্রিল ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন বরাবরে একটি চিঠি প্রদান করে প্রকল্প অনুমোদনের আবেদন জানিয়ে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় একটি প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরির জন্য একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়। ন্যাশনাল একাডেমি ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপম্যান্ট এবং প্রফেশনাল এসোসিয়েট লিঃ নামক এই প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে একটি প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরি করে। গতকাল সিজেকেএস সম্মেলন কক্ষে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা এবং আর্কিটেক্টরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে বসে প্রজেক্ট প্রোফাইলটি প্রদর্শন করেন। এ সময় বেজমেন্ট সহ দশ তলা বিশিষ্ট জিমনেসিয়াম কমপ্লেক্সের থ্রিডি ডিজাইন উপস্থাপন করা হয়। অত্যাধুনিক এই কমপ্লেক্স তৈরি করতে প্রায় তিনশ কোটি টাকার মত খরচ হতে পারে বলে জানিয়েছেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা। তিনি জানান, বিশাল এই কমেপ্লক্সে থাকবে আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা। প্রকল্পটি তৈরির পর প্রি একনেক এবং একনেকে পাশ হওয়ার পর বাস্তবায়ন করতে তিন বছরের মত সময় লাগতে পারে। তবে কতদিনে এটি একনেকে পাস করানো যাবে সেটাই হচ্ছে বড় বিষয়। এই অত্যাধুনিক জিমনেসিয়ামের নাম দেওয়া হয়েছে শেখ জামাল স্মার্ট স্পোর্টস কমপ্লেক্স। আধুনিক এই কমপ্লেক্সের প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন হবে ২৩ হাজার বর্গফুটের। যেখানে বেসমেন্ট ফ্লোরে রাখা হয়েছে প্রবেশ পথ, লবি, পার্কিং ইউটিলিটি সার্ভিস। নিচ তলায় রাখা হয়েছে লবি, অভ্যর্থনা কক্ষ, হল অব ফেইম, সভাপতির কক্ষ, সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ, মিটিং রুম, অন্যান্য অফিসিয়ালদের রুম, স্টাফ রুম, কনফারেন্স রুম, ক্যান্টিন, স্টাফ রুম, স্টাফ ডর্মেটরি এবং গেস্ট রুম। প্রথম তলায় থাকছে যথারীতি লবি। এই ফ্লোরে বডি বিল্ডিং, জিমনেস্টিকস, বক্সিং, ভারোত্তোলন খেলার ব্যবস্থা। পাশাপাশি এখানে থাকবে রেস্টুরেন্ট, পুরুষ এবং মহিলাদের টয়লেট এবং স্টোর রুম। দ্বিতীয় তলায় লবি এবং লাউঞ্জের পাশাপাশি থাকবে দাবা, ক্যারম, টেবিল টেনিস, ইউগা আয়োজনের ব্যস্থা। এছাড়া রেস্টুরেন্ট, কমন টয়লেট এবং স্টোর রুমতো থাকেছই। তৃতীয় তলায় খেলা যাবে জুডু, কারাতে, উশু, তায়কোয়ান্ডোর মত ইভেন্ট। চতুর্থ তলায় খেলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ফেঞ্চিং এবং আর্চারি। পঞ্চম তলায় রাখা হয়েছে রোলার স্কেটিং, শ্যুটিং এবং স্কোয়াশের ব্যবস্থা। ষষ্ঠ তলায় খেলা যাবে ব্যাডমিন্টন, খো খো, সেপাক টাকরো এই তিনটি ইভেন্ট। সপ্তম তলায় কেবল লবি এবং চেঞ্জিং রুমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রুপ টপটা বেশ আকর্ষণীয় করা হয়েছে পরিকল্পনায়। যেখানে লবি, লাউঞ্জ ছাড়াও থাকবে বাস্কেট বল, হ্যান্ডবল এবং ভলিবল খেলার ব্যবস্থা। তবে এই ফ্লোরের সবচাইতে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এখানে থাকবে গ্যালারি। সে সাথে লকার, ওয়াশ রুম এবং স্টোর রুমের ব্যবস্থাতো থাকছেই। দেশে এটি হবে সর্বপ্রথম সবচাইতে আধুনিক এবং আন্তর্জাতিক মানের জিমেনসিয়াম কমপ্লেক্স।
গতকাল চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সভায় উপস্থিত ছিলেন সিজেকেএস সহসভাপতি হাফিজুর রহমান, এডভোকেট শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী, সৈয়দ আবুল বশর, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, অতিরিক্তি সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, কোষাধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন মোঃ জাহাঙ্গীর এবং সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী সহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, জিমনেসিয়ামের সামনের মাঠটাকে টার্ফ স্থাপনের মাধ্যমে আধুনিক মাঠে পরিণত করার একটি প্রকল্প জেলা ক্রীড়া সংস্থা নিজেরাই নিয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পটির টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। জিমনেসিয়াম কমপ্লেক্সের বহুতল বিশিষ্ট প্রকল্পটি হয়ে গেলে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম দেশের ক্রীড়াঙ্গনে একটি মডেলে পরিণত হবে।