চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থায় যে কয়টি ইভেন্ট নিয়মিত হয় তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যাডমিন্টন। একাধিক লিগের পাশাপাশি একাধিক টুর্নামেন্টও হয়ে থাকে ব্যাডমিন্টনে। কিন্তু গত প্রায় দেড় বছরের মত ব্যাডমিন্টন ঠিকমত হতে পারেনি জিমনেসিয়ামের কারণে। এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়ামটি উনডোর গেমসের একমাত্র ভরসা। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের বেশ কিছু নির্বাচনী সরঞ্জাম জিমনেসিয়ামে থাকায় ঠিক অনুশীলনতো দুরের কথা নির্ধারিত খেলাগুলো করতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে গত দুই মেয়াদে ব্যাডমিন্টন সম্পাদক থাকাকালে অনেক কাজ করেছেন দিদারুল আলম। আর সে কারণেই কিনা এবারে তাকে ব্যাডমিন্টন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আর সম্পাদক করা হয়েছে সাহেদ উল আলমকে। যেহেতু ক্রীড়াঙ্গনে সাহেদ উল আলম নতুন তাই মুল দায়িত্বটা পালন করতে হবে দিদারুল আলমকে। তাই বলা যায় কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে তাকে।
দিদারুল আলম জানিয়েছেন তিনি ব্যাডমিন্টনের সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। গত দুই মেয়াদে তিনি বেশ কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তবে এবারে তার মূল লক্ষ্য স্থির করেছেন জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে মান সম্পন্ন খেলোয়াড় সৃষ্টি করা। তার হাত ধরে অনেক কিছু অর্জন করেছে চট্টগ্রামের ব্যাডমিন্টন। যেখানে রয়েছে জাতীয় পর্যায়ে জুনিয়রে পরপর তিনবার দলগত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চট্টগ্রাম। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসে বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম। তার মেয়াদেই চট্টগ্রামে বালক এবং বালিকাদের ব্যাডমিন্টন একাডেমির যাত্রা শুরু হয়। প্রতি বছর লিগ, জেলা চ্যাম্পিয়ন, স্কুল টুর্নামেন্টের মত একাধিক আয়োজন ছিল নিয়মিত। চট্টগ্রামের ব্যাডমিন্টন লিগে প্রথমবারের মত বিদেশী খেলোয়াড় এনে লিগ পরিচালনার কাজটি তিনিই করেছেন সবার আগে। কাজেই ব্যাডমিন্টন নিয়ে তার যে অতীত সাফল্য সেটা ধরে রাখাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
দিদারুল আলম জানিয়েছেন এই মেয়াদে নতুন করে কিছু কাজ করতে চান তিনি। যার মধ্যে সবার আগে খেলোয়াড় তৈরি করতে চান। কারন পাইপ লাইনে খেলোয়াড় সৃষ্টি করা না গেলে সাফল্য আসবেনা। তাই আগে দরকান খেলোয়াড় সৃষ্টি করা। যেহেতু সিজেকেএস জিমনেসিয়ামটি আমরা আবার ফিরে পেয়েছি তাই এখন থেকে আমাদের নিয়মিত অনুশীলন শুরু হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব ভাল মানের কিছু খেলোয়াড় সৃষ্টি করতে। আর এই বিষয়টা বেশ কঠিন। কারন খেলোয়াড়তো আর মাটি দিয়ে তৈরি করা যাবেনা। তাদেরকে ধীরে ধীরে খেলিয়ে তারপরও উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া নিয়মিত আয়োজন গুলোতো রয়েছেই। সাথে নতুন কিছু যোগ করা যায় কিনা সেটাও আমরা বসে চিন্তা করব। একটা সময় চট্টগ্রামের ব্যাডমিন্টন বেশ সমৃদ্ধ ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেটা হারিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য তার কারনও আছে। ব্যাডমিন্টন একেতো বেশ ব্যয় বহুল খেলা। তার উপর যে সমস্ত খেলোয়াড় একটু ভাল খেলে তাদেরকে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাব নিয়ে যায়। ফলে জেলা খেলা কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়ে। আর সে জন্য আমাদের ব্যাকআপ খেলোয়াড় সৃষ্টি করতে হবে।
দিদারুল আলমের কমিটিকে সম্পাদক ক্রীড়াঙ্গনে নতুন হলেও কমিটিতে রয়েছেন ব্যাডমিন্টনের নিবেদিতপ্রান বেশ কিছু মানুষ যাদের উপর ভরসা রাখতে পারেন তিনি। সহ সভাপতি হিসেবে রয়েছেন তানভীল আহমেদ চৌধুরী। যিনি সাবেক সিজেকেএস নির্বাহি সদস্য। রয়েছেন হাজি মোহাম্মদ আলম ববি, সাবেক নির্বাহি সদস্য জাহেদুল ইসলাম, আবদুল মান্নান রানা এবং সালাউদ্দিন রয়েছেন সহ সভাপতি হিসেবে। তিনজন যুগ্ম সম্পাদক হলেন এম এ মুছা বাবলু, মঈনুল ইসলাম আজাদ এবং সাবেক জাতীয় খেলোয়াড় মোরশেদ খান। এছাড়া কমিটির সদষ্য হিসেবে রয়েছেন এনামুল হক, রিফাত বিন আমিন, আনজুমান আরা বেগম, আসাদুজ্জামান খান, কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, ফারুখ আহমেদ, নিমশান জাহাঙ্গীরম পেয়ার মোহাম্মদ পেয়ারু, চম্পাকলি বড়ুয়া, রাশেদুল আমিন, জসিম উদ্দিন এবং ফয়সাল মুনির চৌধুরী। এই দলটি নিয়েই সামনের দিন গুলোতে নতুন কিছু করার প্রত্যয় ঘোষনা করছেন দিদারুল আলম।