আনোয়ারার দুই প্রান্তের দুই প্রকল্প ঘিরে লাখো মানুষের কষ্টের হাহাকার চলছে। টানেল জনপদের সাপমারা খালের সাঁকোটি যখন জীবন–মৃত্যুর প্রশ্ন হয়ে উঠেছে তখন বাকখাইনের স্লুইচগেটটি তৈরি করছে জীবিকার প্রতিবন্ধকতা। বর্ষা আসলেই এই ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এমন পরিস্থিতিতে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান জেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় দুই প্রকল্পের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান চেয়েছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক গত সপ্তাহে সমন্বয় সভায় যোগ দিয়ে উপজেলার আলোচিত দুই প্রকল্প নিয়ে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, সাপমারা খালের ওপর একটি সেতুর জন্য এলাকাবাসীর আক্ষেপ দীর্ঘদিনের। যে এলাকায় বঙ্গবন্ধু টানেলের মত গর্ব করার প্রকল্প আছে সেখানে খালের ওপর সাঁকো বড়ই বেমানান। একইভাবে বাকখাইন খালের স্লুইচ গেটটি ভেঙ্গে যাওয়ায় মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। জেলা প্রশাসক এই দুই প্রকল্পের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সভায় উপস্থিত সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও পানিসম্পদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এই দুই প্রকল্পের বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান।
জানা যায়, জুঁইদন্ডী ও রায়পুর ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এই সাপমারা সাঁকোটি। এছাড়াও রায়পুরের শত শত শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য জুঁইদন্ডীর জে,কে,এস উচ্চ বিদ্যালয় ও আনোয়ার উলুম দাখিল মাদ্রাসায় যায়। বিভিন্ন সময় অধিক মানুষের যাতায়াত ও ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। পরে স্থানীয়দের উদ্যোগে সাঁকোটি মেরামত করা হয়। কিন্তু বর্ষায় টানা বৃষ্টি, জোয়ারের পানি ও বন্যার পানির আঘাতে সাঁকোর অবস্থা নাজুক হয়ে যায়। এতে এলাকার নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীদের সাঁকো পারাপার এখন ঝুঁকিপূর্ণই হয়ে উঠেছে। তাই চলতি বর্ষায় স্থানীয়রা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থী ও পথচারীরা সাঁকো থেকে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
অপরদিকে বাকখাইনের স্লুইচ গেটটি তলিয়ে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের কেঁয়াগড়, বাঘখাইনসহ ৫ গ্রামের অর্ধলাখ মানুষ এই ভোগান্তিতে রয়েছে।
বর্ষাকাল ছাড়াও প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে কেঁয়াগড়, ইছামতি, সিংহরা ও চাতরী গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়া গত ৩ বছর ধরে মোল্লাপাড়ার দুই শত পরিবার উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এলাকার বৃদ্ধ, প্রসূতি নারী শিশুদের অনেক কষ্টে যাতায়াত করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা চরম ঝুঁকি নিয়ে স্কুল কলেজে যাতায়াত করছে।