বরাবরই কোন বিশ্বকাপ খেলতে গেলে বাংলাদেশ দলের উপর প্রত্যাশাটা একটু বেশিই থাকে দেশের ক্রিকেট প্রেমীদের। কিন্তু বরাবরই সে প্রত্যাশার বেলুনটা ফুটো হয়ে যায় টুর্নামেন্ট শেষে। অথচ যখনই ক্রিকেটাররা কোন সাফল্য নিয়ে আসে তখনই ক্রিকেটারদের ঘিরে উচ্ছাসের কোন কমতি থাকেনা ভক্তদের। এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ দলের ফেরাটাও হতে পারতো তেমনই। কিন্তু হলো উল্টোটা। বিমান বন্দরে নেই ভক্তদের ভীড়। সচরাচর যারা বিমান বন্দরে ছিলেণ তারাও ঢ়ুনার দৃষ্টিতেই তাকাল ক্রিকেটারদের দিকে। বলা যায় একটি মাত্র ম্যাচে অনেক কিছুই পেতে পারতো বাংলাদেশ দল। হাতের লক্ষী পায়ে ঠেলে সে ম্যাচটি হারার কারনে ভক্তদের ক্ষোভ যেন শেষ হচ্ছেনা। তাই অনেকটাই নিরবে গতকাল সকালে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। আগের দিন অনেকটা গোপনে দলকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে রেখে দেশে ফিরেছিলেন সাকিব আল হাসান। আর টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে গতকাল দেশে ফিরেছে জাতীয় দলের ১৯ ক্রিকেটার। সকাল ৯টা ৭মিনিটে অ্যামিরেটসের ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে দলের সঙ্গে বাংলাদেশে আসেননি বিদেশি কোচরা। হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে সহ সবাই বিশ্বকাপ শেষে নিজ নিজ দেশে ছুটিতে গেছেন। বিমান বন্দরে নেমে ক্রিকেটাররা যে যার যার মত গাড়িতে করে চলে গেছেন। তবে ক্রিকেটারদের চেহারায় ভ্রমন ক্লান্তির সাথে ছিল হতাশার ছাপ। এবার বিশ্বাকাপে আফগানিস্তান যেমন প্রথমবার সেমিফাইনাল খেলেছে, সে জায়গায় থাকতে পারতো বাংলাদেশও। ২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর প্রথম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পা রাখতে পারতো নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সুপার এইটের শেষ ম্যাচে হঠাৎ করেই সে সুবর্ণ সুযোগ চলে এসেছিল টিম বাংলাদেশের সামনে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুপার এইটের শেষ ম্যাচে ১২.১ ওভারে ১১৬ রান করতে পারলেই সেমিতে পৌঁছে যেতেন শান্ত, লিটন, সাকিব, রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয়, তাসকিন, মোস্তাফিজ ও তানজিম সাকিবরা। কিন্তু সে লক্ষ্য পূরণ হয়নি। লক্ষ্য পূরণ হয়নি না বলে পূরণের চেষ্টাটাই করা হয়নি। ১২.১ ওভারে ১১৬ রান করা বহুদূরে শেষ পর্যন্ত ১৯ ওভারে ১১৪ রানও টপকে যেতে পারেনি শান্ত বাহিনী। ডিএল মেথডে ৮ রানে হেরে বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ করেছে টাইগাররা। বিশ্বকাপের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ যে অনিশ্চিত যাত্রা শুরু করেছিল, সে তুলনায় গ্রুপ পর্বের প্রাপ্তি মন্দ নয়। বেশির ভাগ ভক্ত, সমর্থক ও বিশেষজ্ঞের ধারণা ছিল, বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে নেদারল্যান্ডস আর নেপালের বিপক্ষেই শুধু জিতবে। দক্ষিণ আফ্রিকা আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকেও হারিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারানোর যথেষ্ঠ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তীরে গিয়ে তরি ডুবেছিল তাদের। প্রোটিয়াদের ১১৩ রানে থামিয়েও পারেনি শান্তর দল জিততে। হেরেছে ৪ রানে । বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কখনই ৩ ম্যাচ জিতেনি। এবার ৩ ম্যাচ জিতেই দেশে ফিরেছে । বরং ব্যাটিং পারফরম্যান্স ভালো হলে এবং ব্যাটাররা দায়িত্ব ও কর্তব্যটা যথাযথভাবে পালন করতে পারলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও গ্রুপ ম্যাচ আর আফগানিস্তানের সঙ্গে সুপার এইটেও জেতারও সুযোগ এসেছিল। সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে সেমিফাইনালে পা রাখার সম্ভাবনাও ছিল।