হালদা নদীতে একের পর এক ডলফিন ও মা মাছ মরে ভেসে উঠার ঘটনা ঘটছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে নদী থেকে দুটি মরা কাতলা মাছ উদ্ধার করা হয়। এ পর্যন্ত এক সপ্তাহে হালদায় একটি ডলফিনসহ ৫টি বড় মাছের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ২২ ও ২৬ জুন দুটি বড় মরা কাতলা ও রুই মাছ ভেসে উঠেছিল উরকিরচরের বাকর আলী চৌধুরী ঘাট এলাকায়। ২৬ জুন নদীর গড়দুয়ারা পয়ন্টে পাওয়া যায় মৃত একটি ডলফিন। গতকাল শুক্রবার সকালে যে দুটি মৃত কাতলা মাছ পাওয়া গেছে সেগুলো ভেসে উঠেছিল হাটহাজারীর মাদার্শা কুমারখালী এলাকায়। জানা যায়, মরে ভেসে উঠা সব মাছের ওজন ১০ থেকে ১৫ কেজি। এর মধ্যে একটি মাছের পাখনায় বড়শির আঘাতের চিহ্ন ছিল।
হালদা বিশেষজ্ঞ ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া হালদায় মাছ ও ডলফিন মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হালদা নদীর জলজপ্রাণী রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি বহু বছর ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। নদীর জীববৈচিত্র্যের প্রতি হুমকি হয়ে থাকা নানা দূষণসহ অন্যান্য কারণ তুলে ধরে এগুলো বন্ধের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে আসছি। কিন্তু এসব দাবি, অনুরোধ কর্তৃপক্ষ আমলে না নেয়ায় আজ হালদা পাড়ের মানুষকে মা মাছের মৃত্যু দেখতে হচ্ছে। এ পর্যন্ত নদীর আশ্রয়ে থাকা বিপন্ন প্রাণির তালিকাভুক্ত ৪১টি ডলফিনের মৃত্যু দেখতে হয়েছে। তিনি ডলফিন রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য বন্য ও জলজ প্রাণি সংরক্ষণ বিভাগকে দায়ী করে বলেন, হালদা নিয়ে যাদের ধারণা নেই তাদেরকে বিশেষজ্ঞ সাজিয়ে কাজ করতে গিয়ে হালদায় আশ্রয়ে থাকা ডলফিনগুলোকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একই সাথে তিনি নদীর মা মাছ রক্ষায় নদীর পানিকে দূষণমুক্ত করতে না পারায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও মৎস্য বিভাগের ব্যর্থতাকেও দায়ি করেছেন।
হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর থেকে পরিবেশবিদ, বিশেষজ্ঞদল সকলেই হালদার পানি দূষণ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে আসছিলেন। পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন বর্জ্যের উৎস চিহ্নিত করে দায়িদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার। একই সাথে নদীর মা রক্ষায় জাল–বড়শি ফেলার জন্য দায়িদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবিও করা হয়েছিল। কিন্তু হালদায় এসবের কোনো প্রতিফলন ঘটানো হয়নি। এ কারণে মা–মাছ ও ডলফিনের মৃত্যু বন্ধ হচ্ছে না।