বিজ্ঞানীরা এমন এক যুগান্তকারী ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন, যা খালি বাতাস থেকেও পানযোগ্য পানি নিষ্কাশন করতে সক্ষম। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে বেশ কয়েক ট্রিলিয়ন লিটার মিঠা পানির মজুত থেকে পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে ক্রমবর্ধমান পানযোগ্য পানির চাহিদা মেটাতে সহায়ক হতে পারে এ ডিভাইসটি।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এমআইটি) একদল গবেষক এমন সাশ্রয়ী ও নিশ্ছিদ্র ব্যবস্থা বানিয়েছেন, যেখানে ‘সর্পশন–বেইজড অ্যাটমসফিয়ারিক ওয়াটার হার্ভেস্টিং (এসএডব্লিউএইচ)’ নামের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। আর পানি সংগ্রহ করতে তারা এমন এক ধরনের ডানা ব্যবহার করেছেন, যা পানি শুষে নিতে পারে। খবর বিডিনিউজের।
এক গবেষণায় এ প্রযুক্তির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন গবেষকরা। তারা বলেন, বিশ্বের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষ পানির অভাবে ভুগছে। অনুমান বলছে, ২০৩০ সাল নাগাদ গোটা বিশ্বে পানি চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশই পূরণ করা সম্ভব হবে না। এর ফলে জনস্বাস্থ্য ও কৃষি খাত আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রায় এক হাজার তিনশ ট্রিলিয়ন লিটার মিঠা পানি আছে, যা প্রচলিত পানি সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর নির্ভর না করেই নিষ্কাশন করা সম্ভব। বায়ুমণ্ডল থেকে এই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রতিকূল আবহাওয়াতেও পানযোগ্য পানি উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখাচ্ছে, যেখানে প্রচলিত পানি নিষ্কাশন পদ্ধতিতে কুয়াশা বা শিশির থেকে পানি সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না।
প্রচলিত এসএডব্লিউএইচ পদ্ধতিগুলো সাধারণত সৌরশক্তির ওপর নির্ভর করে থাকে। তবে এক্ষেত্রে চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পাশাপাশি এর শক্তির ঘনত্বও কম হতে পারে। এর মানে দাঁড়ায়, এগুলো মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে উপযুক্ত নয়।
অন্যদিকে এ চাহিদা পূরণের জন্য বর্জ্য তাপের সুযোগ নেয় নতুন ডিভাইসটি। বিজ্ঞানীদের দাবি, এটি একটি সাশ্রয়ী ও উচ্চ কার্যকারিতা সম্পন্ন সমাধান। এই গবেষণার বিস্তারিত উঠে এসেছে ‘ডিজাইন অফ এ কমপ্যাক্ট মাল্টিসাইক্লিক হাইপারফর্মেন্স অ্যাটমসফেরিক ওয়াটার হার্ভেস্টার ফর এরিড এনভায়রনমেন্টস’ শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে, যা বুধবার প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল এসিএস এনার্জি লেটার্সে।