সোনাদিয়া দ্বীপে প্যারাবনের গাছ কেটে চিংড়ি ঘের তৈরির কার্যক্রম বন্ধে দুই সচিবসহ সাত সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলার আইনজীবী জাকিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত এ আইনি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে গাছ কেটে অবৈধ চিংড়ি ঘের তৈরি বন্ধের পাশাপাশি দ্বীপ ধ্বংসকারী সকল কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইসাথে ইতিমধ্যে এসব কার্যক্রমের কারণে সোনাদিয়া দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ এবং বিরল উদ্ভিদ–প্রাণী প্রজাতির যে ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়।
যাদেরকে এ চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান বন সংরক্ষক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কঙবাজারের জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর কঙবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক ও মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
সংবাদপত্রের বরাত দিয়ে বেলার পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, সোনাদিয়া দ্বীপে গত চার মাসে নতুন করে অন্তত ২ হাজার একর প্যারাবন দখল করে ৩৭ টির বেশি চিংড়ি ঘের তৈরি করা হয়েছে। কেটে ফেলা হয়েছে ছোট ও বড় ২২ লাখের বেশি বাইন, কেওড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
সোনাদিয়া দ্বীপটিকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। ফলে সেখানকার মাটি, পানি ও প্রাকৃতিক পরিবেশের কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। এরপরও দ্বীপে গাছ কেটে চিংড়ি চাষ শুরু করলে সোনাদিয়া দ্বীপ রক্ষায় ২০০৩ সালে দ্বীপের ৪ হাজার ৯১৬ হেক্টর ইজারা অথবা দ্বীপ ধ্বংসকারী যে কোনো কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের এ আদেশ এখনো বহাল রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলার আইনজীবী জাকিয়া সুলতানা বলেন, উচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও সোনাদিয়া দ্বীপে গাছ কেটে চিংড়ি ঘের তৈরি আদালত অবমাননার শামিল। তাই এই চিঠির মাধ্যমে কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম বন্ধ না হলে পুণরায় আদালতের আশ্রয় নেওয়া হবে।