ক্রিকেটটাকে দারুণ উপভোগ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দর্শকরা। কি টেস্ট কি ওয়ানডে, মাঠে দারুণ উৎসবমুখর তারা। আর টি–টোয়েন্টি হলেওতো কথাই নাই। নিজেদের মাঠে টি–টেয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছিল ক্যারিবীয়রা। সে সাথে সর্বাধিক তিনবার ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের শিরোপা জেতাও হলোনা ক্যারিবীয়দের। ক্যালিপসো সুর থামিয়ে দিয়ে স্বাগতিকদের বিদায় করে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত অজেয় থাকল দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচে জয়ের পর সুপার ফোর পর্বের তিনটি ম্যাচেও জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে সুপার এইট পর্বের গ্রুপ–২ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ চারে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। আর গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ চারে জায়গা করে নিলে ইংল্যান্ড। গতকাল সোমবার সকালে এন্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সুপার এইট পর্বের ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ডিএলএস মেথডে ৩ উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর শেষ আট থেকেই বিদায় নিতে হয় স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। দারুণ জমে উঠা ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত জয়ের কাছে গিয়েও ফিরতে হয়েছে স্বাগতিকদের হতাশা নিয়ে। ফলে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে চলে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের রাতে ইংল্যান্ড তাদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে।
গতকাল টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম দুই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে। তবে তৃতীয় উইকেটে কাইল মায়ার্স এবং রোস্টন চেইস মিলে ৮১ রান যোগ করে বড় ইনিংসের দিকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এজুটি ভাঙ্গার পর আর দাড়াতে পারেনি স্বাগতিক দলেল পরের ব্যাটাররা। ৩৪ বলে ৩৫ রান করা মায়ার্সকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন শামসি। এরপর চেইস লড়াই করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অপর প্রান্তে বাকিরা তাকে সঙ্গ দিতে পারেনি। দলকে ৯৭ রানে রেখে ষষ্ট উইকেট হিসেবে ৪২ বলে ৫২ রান করে ফিরেন চেইস। এরপর বাকিরা তেমন সুবিধা করতে পারেনি। ফলে মাত্র ১৩৫ রানে থামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে তাবারেজ শামসি ২৭ রানে নিয়েছেন ৩ টি উইকেট।
১৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা দুই ওভার ব্যাট করার পর বৃষ্টি নামে। সে দুই ওভারে ১৫ রান তুললেও দুটি উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃষ্টির পর পুনরায় খেলা শুরু হলে ১৭ ওভারে ১২৩ রানের লক্ষ্য নির্ধারিত হয় দক্ষিন আফ্রিকার সামনে। প্রথম দুই ওভারে কুইন্টন ডি কক এবং রিজা হেন্ডরিককে হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে মার্করাম এবং স্টাভস মিলে ২৭ রান যোগ করেন। জোসেফের বলে ১৮ রান করে ফিরেন মার্করাম। এরপর স্টাভস এবং ক্লাসেন মিলে আরো ৩৫ রান যোগ করলে এক সময় মনে হচ্ছিল সহজে জিতে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু ১০০ রানে পৌছাতে ক্লাসেন, মিলার এবং স্টাভ ফিরে এলে আবার চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু জানসেন চেষ্টা করছিলেন দলকে টানার। তবে অপর প্রান্তে তেমন সঙ্গ পাচ্ছিলেন না। ক্রমশ জমে উঠা ম্যাচটির শেষ ওভারে দক্ষিন আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ৫ রান। কিন্তু ওবেদ ম্যাকয় এর করা ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে দলকে অসাধারন জয় এনে দেওয়ার পাশাপাশি সেমিফাইনালে তুলে দেন কাগিসু রাবাদা। ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন জানসেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৩টি উইকেট নেন চেইস। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রাসেল, জোসেফ এবং মোটি। ম্যাচ সেরা হয়েছেন তাবারেজ শামসি।