এখনো ‘আইডিয়া’ নিতেই আসছে লোকজন

কোরবানির পশুর হাট কাল থেকে বিক্রি বাড়ার আশা বেপারিদের

মোরশেদ তালুকদার | বৃহস্পতিবার , ১৩ জুন, ২০২৪ at ৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সাগরিকা পশুর হাটে ১৪টি গরু এনেছেন মোবিন বেপারি। গরুগুলোর দাম দেড় লাখ টাকা থেকে আড়াই লাখ টাকা। গত শুক্রবার রাতে তিনি এসেছেন। পাঁচদিন পেরুলেও গতকাল পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি হয়নি তার। এতে কিছুটা হতাশ হলেও বিক্রি নিয়ে আশাবাদী তিনি। আজাদীকে মোবিন বেপারি বলেন, ২০১৮ সাল থেকে গরু নিয়ে আসছি। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, কোরবানি বাজারে শুরুতে বিক্রির হার কম থাকে। শেষের দিকে এসে বেচাকেনা বাড়ে। তাই আশা করছি সবগুলো গরু বিক্রি হবে। সাগরিকা পশুর হাটের আরো কয়েকজন গরু বিক্রেতার সাথে আলাপকালে তারাও একই কথা বলেন। কর্ণফুলী নূর নগর পশুর হাটে আসা বেশ কয়েকজন বেপারিও প্রায় একই কথা বললেন। একই বক্তব্য ছিল বাজারের ইজারাদারদেরও। তারা বলছেন, শহরের কোরবানিদাতাদের বেশিরভাগই রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যার কারণে শেষ দিকেই কিনেন কোরবানি পশু। ওই হিসেবে বাজার জমে উঠে শেষে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে সরকারি বন্ধ শুরু। ফ্রি থাকায় ওইদিন থেকেই সবাই বাজারমুখী হবেন। এতে বাড়বে বেচাকেনা। কর্ণফুলী নূর নগর পশুর হাটে গতকাল কথা হয় গরু বিক্রেতা মামুনের সঙ্গে। কুষ্টিয়া থেকে আসা বিক্রেতা এনেছেন ১১টি গরু। তিনি আজাদীকে বলেন, ১ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা দামের গরু আছে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি গরু বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলো কোরবানিদাতারা দেখছেন। অনেকে পছন্দও করেছেন। কিন্তু দরদাম বনিবানা না হওয়ায় বিক্রি করিনি।

বিবিরহাট গরুর বাজারে কথা হয় দিদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, অফিস করে বেরুতে বেরুতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। এরপর ক্লান্ত শরীরে বাজারে আসতে ইচ্ছে করে না। আজই (গতকাল) প্রথম আসলাম। দাম কেমন আইডিয়া নিচ্ছি। কালও (আজ) আসব। পছন্দ হলে কিনব। না হলে শুক্রবার বা শনিবার নিয়ে নিব।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনয় এবার নগরে স্থায়ীঅস্থায়ী ১২টি পশুর হাট বসে। এর মধ্যে অস্থায়ী তিনটি স্থায়ী হাট হচ্ছেসাগরিকা পশুর বাজার, বিবিরহাট গরুর হাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার। অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছেমধ্যম হালিশহর মুনির নগর আনন্দ বাজার সংলগ্ন রিং রোডের পাশে খালি জায়গা, মোহরা ওয়ার্ডের জানালী রেল স্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের পরিত্যক্ত খালি জায়গা, কর্ণফুলী পশুর বাজার (নূর নগর হাউজিং এস্টেট অথবা বহাদ্দারহাট এক কিলোমিটার হতে শাহ আমানত ব্রিজের উত্তর পাশ পর্যন্ত), ৪১নং ওয়ার্ডের বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের খালি মাঠ, ৪০নং উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের পূর্ব হোসেন আহম্মদ পাড়া সাইলো রোডের পাশে টিএসপি মাঠ ও একই ওয়ার্ডের মুসলিমাবাদ রোডের সিআইপি জসিমের খালি মাঠ, ২৬ নং ওয়ার্ডের বড়পোল সংলগ্ন গোডাউনের পরিত্যক্ত মাঠ, ৩নং পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের ওয়াজেদিয়া মোড় এবং ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের আউটার রিং রোডস্থ সিডিএ বালুর মাঠ।

গত কয়েকদিন ধরে এসব হাট ঘুরে দেখা গেছে, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুর, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লাহ, নাটোরসহ অন্যান্য এলাকা থেকে গরু এনেছেন বেপারিরা। আছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, পটিয়া, আনোয়ারা ও বাঁশখালী থেকে নিয়ে আসা গরুও। স্থানীয় বিভিন্ন খামারে হৃষ্টপুষ্টকৃত প্রচুর গরুও আনা হয়েছে বিক্রির জন্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্ত হবে কাপ্তাই সড়ক
পরবর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপ-পুলিশ গোলাগুলি,আরসা কমান্ডার নিহত