সার্ভার ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস শুল্কায়ন ধীরগতি হওয়ায় ব্যাহত পণ্য খালাস

জাহেদুল কবির | বুধবার , ১২ জুন, ২০২৪ at ৭:২২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে দিনভর থেমে থেমে সার্ভার ও বিদ্যুতের আসা যাওয়ার কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রমে ব্যাহত হয়েছে। যথা সময়ে পণ্যের শুল্কায়ন করতে না পারার কারণে বন্দর থেকে পণ্য খালাসও হয়নি।

আামদানিরপ্তানি সংশ্লিষ্টদের দাবি, গতকাল সকাল থেকে দিনভর কিছুক্ষণ পর পর বিদ্যুত আসা যাওয়া করেছে। কাস্টমসের জেনারেটর সাপোর্টও অনেক সময় পাওয়া যায়নি। এছাড়া সার্ভারের ধীরগতির কারণে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতে বেগ পেতে হয়েছে আমদানিকারকদের। সেবাগ্রহীতারা বলছেন, সার্ভার ত্রুটির এই সমস্যাটি দীর্ঘদিন ধরে চলমান রয়েছে। এ বিষয়টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান মিলেনি। প্রায় সময় সার্ভার হ্যাং করে ও নেটওয়ার্ক চলে যায়। এতে আমদানিকারকের কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যকে গতিশীল করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে অটোমেশনের যাত্রা শুরু হয়। এক সময় অ্যাসাইকুডা প্লাস প্লাস ভার্সন থাকলেও গত ২০১৩ সাল থেকে কাস্টমসে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড পদ্ধতি চালু হয়। এই পদ্ধতিতে আামদানি রপ্তানি কার্যক্রমের প্রায় সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই সার্ভারের গতি কমে যাওয়া কিংবা বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে আমদানিকারকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দেখা গেছে, যে কাজ এক মিনিটে হওয়ার কথা সেটি করতে পাঁচ মিনিট লাগছে। কাস্টমসে আমদানিরপ্তানি মিলে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার পর্যন্ত বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী রিগ্যান দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম সার্ভারের সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ভুগতে হচ্ছে। বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) জানানোর পরেও কোনো কাজ হচ্ছে না। কিছুদিন পর পর সার্ভারের ত্রুটির কারণে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতে বেগ পেতে হচ্ছে। গত দুই তিনদিন ধরে সার্ভারের সমস্যা চরম আকার ধারণ করছে। আগামী বৃহস্পতিবার (কাল) থেকে ছুটি শুরু হচ্ছে। এখন আমদানিকারকরা পণ্য খালাস করতে না পারলে বন্দরের ডেমারেজ কে দিবে। গতকালও (আজ) একটা বিল অব এন্ট্রি দাখিলসহ শুল্ক কর পরিশোধ করতে যেখানে ৫ মিনিট লাগার কথা, সেখানে আধা ঘণ্টাএকঘণ্টায়ও কাজ হচ্ছিল না। বর্তমান সরকার যেখানে পেপারলেস অটোমেশন সিস্টেমকে প্রমোট করার উদ্যোগ নিচ্ছে। সেখানে সার্ভারের ত্রুটির বিষয় তো মানা যায় না। এছাড়া বিদ্যুতের সমস্যাও ছিল খুব বেশি। কিছুক্ষণ পর পর বিদ্যুতের আসা যাওয়ার কারণেও শুল্কায়ন বন্ধ ছিল। এ সময় জেনারেটরের সাপোর্টও ঠিকমতো পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপার জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার নাজিউর রহমান মিয়া দৈনিক আজাদীকে বলেন, সার্ভারের সমস্যার বিষয়টি আমরা এনবিআরকে জানিয়েছি। মূলত বাজেটের পর কিছু পণ্যের সিপিসি ও এইচএস কোড পরিবর্তিত হয়। এসবের সংযোজন ও বিয়োজনের কারণেও সার্ভার ধীরগতি হতে পারে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বিষয়ে আমরা পিডিবির সাথে কথা বলেছি। আমাদের জেনারেটর দিয়ে তো সার্বক্ষণিক সাপোর্ট দেয়া যায় না। কারণ জেনারেটর একটানা চালানো যায় না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিআইইউর নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আবসার
পরবর্তী নিবন্ধঝিনাইদহ জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক আটক