পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন গোপালগঞ্জের ‘সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের’ পুকুর থেকে প্রায় ৬০০ কেজি মাছ চুরির চেষ্টায় মামলা করেছে দুদক। গোপালগঞ্জের দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সোহরাব হোসেন সোহেল বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় রিসোর্টের হ্যাচারি কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে আদালতের ক্রোক আদেশের ১৬ দিন পর রিসোর্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। আদালতের নির্দেশে সেখানে রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাবলী শবনম। গতকাল শনিবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী পার্কের যাবতীয় কার্যক্রম চলছে বলে জানান তিনি। খবর বিডিনিউজের।
দুদকের উপ–পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, আদালতের নির্দেশে ক্রোক করা সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কের ভেতরের পুকুরের মাছসহ বিভিন্ন সম্পদ চুরি করা হচ্ছে বলে শুক্রবার বিকালে গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট মৎসজীবী, ইউপি চেয়ারম্যান বিনয় সরকার আনাদী, রিসোর্টের কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মাছ চুরির প্রচেষ্টার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। পরে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মামলা করা হয়েছে। মামলায় সাভানা ইকো রিসোর্ট প্রাইভেট লিমিটেডের পুকুর থেকে ধরা ৫৫৫ কেজি তেলাপিয়া মাছ ও সাড়ে ৩৭ কেজি কাতলা মাছ বিক্রি করে নিলাম মূল্য অনুযায়ী ৮৩ হাজার ৭৫৪ টাকা আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী মো. সোহরাব হোসেন সোহেল উল্লেখ করেন, দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ–পরিচালক মো. মশিউর রহমানের নির্দেশে শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে টিম নিয়ে রিসোর্টে যান। সরেজমিন তদন্তে রিসোর্টের ভেতরের ২০ একরের একটি পুকুরে জেলেদের মাছ ধরতে দেখেন। দুদক টিম যাওয়ার খবর পেয়ে রিসোর্টের মৎস্য হ্যাচারি কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামসহ অন্য আসামিরা পালিয়ে যায়। মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত জেলেদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ওই হ্যাচারি কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামের নির্দেশে তারা মাছ ধরছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, মাছ পচনশীল হওয়ায় সেখানে উপস্থিত গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাবলী শবনম ও জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম জিল্লুর রহমান রিগানসহ অন্যদের সহযোগিতায় জব্দ তালিকা প্রস্তুত করে মাছ উপস্থিত মৎস্যজীবীদের মধ্যে নিলামে ৮৩ হাজার ৭৫৪ টাকায় বিক্রি করা হয়। এ টাকা সরকারি খাতে জমা দেওয়ার জন্য জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এসব টাকা জমা দেবেন।