নগরের পাঁচলাইশ ওআর নিজাম রোডে মক্কী মসজিদের পাশে উচ্ছেদ করা দোকানগুলো আবারও নির্মাণ করা হচ্ছে। এজন্য উচ্ছেদ করা জায়গার একটি অংশে টিন দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। এর ভেতরে চলছে নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে সেখানে কয়েকটি পিলার নির্মাণ করা হয়েছে। পিলারগুলোর সঙ্গে স্টিলের পাটাতন দিয়ে ছাদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া আরেকটি অংশে টিন দিয়ে নির্মিত দোকানে একটি চা এবং পান–সিগারেটের দোকান গড়ে তোলা হয়। দোকানটির সামনেও একটি পিলার নির্মাণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ও আর নিজাম রোডের প্রবর্তক মোড় থেকে পাঁচলাইশ পর্যন্ত অংশে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে গ্রিড এ ওয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাঁচ বছর মেয়াদি চুক্তি করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠানটি শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে মক্কী মসজিদের পাশে নির্মাণ করে দুটি দোকান। বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত দোকান দুটির একটি হচ্ছে ফ্রেশ ফুড রেস্টুরেন্ট। অপরটি হচ্ছে শ্রেষ্ঠা মেডিসিন নামে ফার্মেসি। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ছিল, এখানে সৌন্দর্যবর্ধন নাকি বাণিজ্যিকীকরণ প্রাধান্য পেয়েছে?
অবশ্য চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ১৮ জানুয়ারি গ্রিড এ ওয়ান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী সুমন বসাককে চিঠি দিয়ে চুক্তি বাতিল করা হয় বলে জানায় চসিক। এরপর ২২ জানুয়ারি দোকান দুটি উচ্ছেদ করে চসিক। তবে উচ্ছেদের কিছুদিনের মধ্যে নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে চায়ের দোকানটি এপ্রিল মাসে দৃশ্যমান হয়।
এ বিষয়ে জানার জন্য সুমন বসাককে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে ওই স্থানে গেলে আলম নামে একজন নিজেকে নির্মাণ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত দাবি করে আজাদীকে বলেন, সুমন বসাক জায়গাটি লিজ নিয়েছেন। সিটি কর্পোরেশন উচ্ছেদ করলে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। আদালত উচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেয়। তাই আগে যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে চসিকের স্টেট অফিসার রেজাউল করিম আজাদীকে বলেন, উচ্ছেদ করা জায়গায় দোকান নির্মাণের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। আমরা উচ্ছেদের পর তারা রিট করলে আদালত স্থগিতাদেশ দেয়। এ বিষয়ে আমাদের করণীয় ঠিক করতে আইন কর্মকর্তার মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তিনি বলেন, যদি উচ্ছেদকৃত জায়গায় কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না বলে মতামত পাই, তাহলে সাথে সাথে আবারও উচ্ছেদ করব।
এদিকে গত মাসে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম আজাদীকে বলেছিলেন, স্থগিতাদেশ হওয়ায় সেখানে যে অবস্থায় আছে সেভাবে থাকবে। তাই নতুন করে দোকান দেওয়ার সুযোগ নেই।
গতকাল সেখানে একটি সাইনবোর্ড টাঙানো দেখা গেছে। সেখানে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লেখা আছে : উক্ত প্রকল্প এলাকা উচ্ছেদের বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টের রিটি পিটিশন নং–৭০৪/২০২৩ মূলে স্থগিতাদেশ প্রদান করেছেন। প্রকল্প এলাকায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত।