মানুষসহ প্রাণীকুলের সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনের জন্য অনুকুল পরিবেশের বিকল্প নেই। পরিবেশের কোনও একটা অংশ ক্ষতির সম্মুখীন হলে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে জীবনযাত্রায়। অথচ আজ সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষ পরিবেশের চাহিদা অনুযায়ী না চলে পরিবেশকে নিজেদের স্বার্থ মত ব্যবহারের ফলে বর্তমানে মানুষকেই এর চরম মাশুল দিতে হচ্ছে। মাটিতে অধিকহারে রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মাটি হারাচ্ছে তার আদ্রতা। পরিবেশের সবকটি উপাদান তথা প্রাকৃতিক সম্পদ, পানি, বায়ু এবং মাটি দূষিত হয়ে বিষাক্ত ছড়াচ্ছে পৃথিবী জুড়ে। দিন দিন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে অজানা অসংখ্য রোগে। যত্রতত্র প্লাস্টিকের ব্যবহার, গণহারে বৃক্ষ এবং বন উজাড়, যানবাহনের ক্রমবর্ধমানহারে বৃদ্ধি এবং অপরিকল্পিত অধিক নগরায়ণের ফলে পরিবেশ মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছেতো উঠছেই। এভাবে চলতে থাকলে আগামী প্রজন্মের জন্য পরিবেশ অনিরাপদ তথা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে এতে কোনও সন্দেহ নেই। পরিবেশ মানুষ এবং সকল প্রাণের ধারক বাহক। ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিকূল পরিবেশ কখনো সভ্যতার জন্য কল্যাণকর হতে পারে না। মানুষ, অন্যান্য প্রাণি ও উদ্ভিদের স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা তথা পৃথিবীতে প্রাণীকূলের দীর্ঘস্থায়ী অস্তিত্বের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশের সংরক্ষণ এবং এর গুণমান বজায় রাখা অত্যাবশ্যক। পরিবেশের স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখতে অধিক হারে বৃক্ষ রোপণের বিকল্প নেই। আমাদের উচিত যত সম্ভব তত বেশি পরিমাণে বৃক্ষ রোপণ করা। কারণ, গাছ রোপণের মাধ্যমে বায়ু দূষণের মাত্রাকে অধিকহারে কমিয়ে আনা সম্ভব। বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (স.) বলেছেন, ‘আগামীকাল কিয়ামত হবে জানলেও আজ একটা গাছ রোপণ কর’। রাসুল (স.) এর এই হাদিস থেকে বৃক্ষরোপণ এবং বনায়ন পরিবেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা বুঝা যায়। আসলেই বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে চলমান এই পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বে অধিকহারে বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে সবুজ বিপ্লব সংগঠিত করা ছাড়া বিকল্প নেই। এরই অংশ হিসেবে আসুন আমরা পরিবেশ রক্ষায় অন্তত একটা করে হলেও গাছ লাগাতে চেষ্টা করি। যত্রতত্র প্লাস্টিকের ব্যবহার সাধ্যমত কমানোর পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ তথা বনায়নে গুরুত্ব দিলে আশা করা যায় পরিবেশ অনেকাংশে স্বাভাবিক থাকবে।