ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে দেশের সাত জেলায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে বানের জলে ভেসে, দেয়াল ও গাছ চাপায়, আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো–অর্ডিনেশন সেন্টারের (এনডিআরসিসি) দুর্যোগ সংক্রান্ত সবশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল বুধবার যুগ্মসচিব (এনডিআরসিসি) মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন বলেন, জেলা প্রশাসকদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১৬ জনের নাম, ঠিকানা ও মৃত্যুর কারণসহ মৃত ব্যক্তির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা ও চট্টগ্রামে একজন করে, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলায় ৩ জন করে এবং পিরোজপুরে ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এনডিআরসিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রেমালের আঘাতে দুর্গত মানুষের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৯৯ হাজার ৪৬৪ জন। এ সময় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫২৮টি বাড়িঘর আংশিক ও ৪০ হাজার ৩৩৮টি বাড়ি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়েছে। এবার ঝড়ের সময় নয় হাজারের বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮ লাখ ৮ হাজার ৫১০ জন আশ্রয় নেয়। সাড়ে চার হাজারেও বেশি গবাদি পশুও আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, দুর্যোগ সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির তথ্য মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। একীভূত তথ্য পেতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। এবার ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলকভাবে বেশি হয়েছে। ধান মাঠে তেমন ছিল না। তবে মাছের ঘের বেশি ডুবে গেছে; এ খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
গত ২২ মে পূর্ব–মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম–মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে ক্রমান্বয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ দশা পেরিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় গত শনিবার সন্ধ্যায়। তখন এর নাম হয় ‘রেমাল’। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি পরিণত হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। এর প্রভাবে ওইদিন বিকাল থেকে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টি শুরু হয়। পরদিন সকাল থেকে সারাদেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়ে দুর্বল হয়ে আসে রেমাল।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপদ্রুত এলাকার ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে আজ বৃহস্পতিবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।