ব্যস্ত হয়ে উঠা চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাজস্ব আয় গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি অর্থবছরে দেশের দ্বিতীয় ব্যস্তমত এই বিমানবন্দরে আড়াইশ’ কোটিরও বেশি টাকার রাজস্ব আয় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ২২৫ কোটি টাকা। ডলার সংকটসহ নানা কারণে এই বিমানবন্দর দিয়ে আমদানি কার্যক্রম প্রায় বন্ধ থাকলেও সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ মিলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬০টি ফ্লাইট চলাচল করে। যাত্রী হ্যান্ডলিং হয় পাঁচ হাজারেরও বেশি।
সিভিল এভিয়েশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ১৯৯৮ সালে বড় পরিসরে উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পাঁচশ’ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের বর্তমান টার্মিনাল, রানওয়ে, টেক্সিওয়ে এবং টারমাক সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করা হয়। ২০০১ সালের ২৪ মার্চ নয়া ভবনে বিমানবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য সর্বমোট ৯৬৪৬ ফুট এবং প্রস্থ ১৪৮ ফুট। ইতোমধ্যে রানওয়ের উন্নয়নে বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এই রানওয়ে ব্যবহার করে বোয়িং ৭৪৭–৪০০ এবং এয়ারবাস এ ৩৪০–এর মতো সুপরিসর বিমানগুলি সহজেই ওঠানামা করতে পারে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে ব্যবহার করে ড্রিম লাইনারও চলাচল করছে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বছর দুয়েক আগেও প্রচুর পণ্য আমদানি হতো। লাগেজ রুলের আওতায় আসা এসব পণ্য থেকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বেশ ভালোই রাজস্ব আয় করতো। কিন্তু ডলার সংকটসহ বেশ কিছু নীতিগত সিদ্ধান্তের কারণে লাগেজ যোগে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। এই খাত থেকে বিমানবন্দরের রাজস্ব আয় বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এরপরও বিমানবন্দরে এয়ারক্রাফট ল্যান্ডিং, পার্কিংসহ নানাখাতে আয় বাড়ার ফলে মোট রাজস্ব আয় গতবছরের তুলনায় অন্তত ২৫ কোটি টাকা বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে সূত্র বলেছে, প্রতিদিন গড়ে ৬০টির মতো আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট অপারেট করায় এয়ারক্রাফট থেকে রাজস্ব বেড়েছে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ তাসলিম আহমেদ রাজস্ব আয় বৃদ্ধির কথাটি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, গত বছর আমাদের রাজস্ব আয় হয়েছিল ২২৫ কোটি টাকা। এবার আমরা আড়াইশ’ কোটিরও বেশি টাকার রাজস্ব আয় করতে সক্ষম হবো। তিনি বলেন, বিমানবন্দরের ব্যস্ততা বেড়েছে। ফ্লাইটের সংখ্যা বেড়েছে, বেড়েছে যাত্রী সংখ্যা। আন্তর্জাতিক নানা গন্তব্যে এখান থেকে ফ্লাইট যাচ্ছে, আরো নতুন নতুন অপারেটরকে এখানে আনার ব্যাপারেও চেষ্টা চলছে। বর্তমানে দৈনিক গড়ে ২০টির মতো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এবং ৪০টির কাছাকাছি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট এই বিমানবন্দরে ওঠানামা করছে বলেও তিনি জানান।
বিমানবন্দরের সক্ষমতা যথেষ্ট বাড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা আরো নতুন অপারেটর আনার চেষ্টা করছি। বর্তমানে সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বিমানবন্দর খোলা থাকে। তবে হজ্ব ফ্লাইটসহ জরুরি সময়ে পুরো রাত বিমানবন্দরের সার্ভিস দেয়া হয় বলেও গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ উল্লেখ করেন।