ঢাকা–চট্টগ্রাম–কক্সবাজার এবং ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটের চারটি আন্তঃনগর ট্রেনে প্রথমবারের মতো আগামী ১ জুন থেকে কেবিন সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কেবিন সুবিধা যুক্ত হলে পরিবার–পরিজন নিয়ে ট্রেনযাত্রা আরও নিরাপদ, আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে বলে আশা করছেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডিআরএমএর দপ্তর থেকে পরিবহন বিভাগ থেকে জানা গেছে, ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটের বিরতিহীন ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস এবং সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে ৩টি করে এসি কেবিন এবং ১টি করে নন এসি কেবিন যুক্ত হতে যাচ্ছে আগামীকাল থেকে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা নতুন রেক দিয়েই এই দুই ট্রেনে কেবিন সুবিধা চালু করা হবে।
এদিকে ঢাকা–চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটের কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেসেও প্রথমবারের মতো কেবিন যুক্ত হচ্ছে আগামীকাল। দুটি ট্রেনেই ৩টি করে কোরিয়ান এসি কেবিন যুক্ত হচ্ছে। এতে ট্রেনে চড়ে পর্যটননগরী কক্সবাজার যাওয়া যাবে শুয়ে শুয়েই। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সুবর্ণ ও সোনার বাংলা ১৮টি রেক নিয়ে চলবে। এর মধ্যে ৬টি শোভন চেয়ার, ৫টি এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা), ৪টি কেবিন, ২টি গার্ডব্রেক ও খাবার গাড়ি এবং ১টি পাওয়ার কার রয়েছে। কেবিনের ১৩২টিসহ দুটি ট্রেনেরই মোট আসন সংখ্যা রাখা হয়েছে ৭৯৭টি। এ উপলক্ষে কোরিয়ান এসি স্লিপার (কেবিন) কোচ গতকাল কক্সবাজার পৌঁছেছে। গতকাল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনে দুইটি এসি কেবিন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে আরও কয়েকটি নেয়া হবে বলে জানা গেছে। তবে ট্রেনের সময়সূচি আগের মতোই সুবর্ণ সকাল সাড়ে ৭টা এবং সোনার বাংলা বিকেল পৌনে ৫টায় চট্টগ্রাম ছাড়বে।
রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটে ১৯৯৮ সাল থেকে চলছে দেশের প্রথম বিরতিহীন ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস। দুই যুগেরও বেশি সময় পর এই ট্রেনে এখন কেবিন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে। আরেক বিরতিহীন ট্রেন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস চালু হয়েছিল ২০১৬ সালে। প্রায় ৮ বছর পর এই ট্রেনেও প্রথমবারের মতো কেবিন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে আগামীকাল থেকে।
নতুন কোচ যুক্ত হচ্ছে গোধুলী, তুর্ণা ও প্রভাতীতে : ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটের গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃনগর ট্রেন মহানগর গোধুলী, তুর্ণা এক্সপ্রেস এবং প্রভাতী ট্রেন আগামীকাল নতুন কোচে চলবে। ব্র্যান্ড নিউ কোরিয়ান লাল–সবুজের রেক এই তিনটি আন্তঃনগর ট্রেনে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আগামীকাল থেকে নতুন রেকে (কোচে) চলবে এই তিনটি আন্তঃনগর।
এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, ১ জুন থেকে ঢাকা–চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটের কক্সবাজার এক্সপ্রেস এবং পর্যটক এক্সপ্রেসে ব্র্যান্ড নিউ কোরিয়ান লাল–সবুজ কেবিন কোচ যুক্ত হচ্ছে। একই দিন ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটের সুবর্ণ ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেসেও কেবিন কোচ যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি নতুন রেক যুক্ত হবে। একই সাথে মহানগর গোধুলী ও তুর্ণা এক্সপ্রেস এবং প্রভাতী ট্রেনেও কেবিন কোচসহ নতুন কোরিয়ান রেকে প্রতিস্থাপন করা হবে ১ জুন।
গত ২২ মে রেলওয়ের টিকিট বিক্রির অনলাইন সাইটে কক্সবাজার এক্সপ্রেস এবং পর্যটক এক্সপ্রেসে আগামী ১ জুন থেকে এসি বার্থ ও এসি সিটের আসন বিক্রি শুরু করেছে। দুটি ট্রেনেরই উভয় দিকের প্রারম্ভিক স্টেশন ধরে অনলাইনে এসব আসন পাওয়া যাচ্ছে।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে দিনে চলা ট্রেন পর্যটক এক্সপ্রেসে (৮১৬) যুক্ত হয়েছে এসি সিট (বসে যাওয়ার আসন)। তিনটি কোচে মোট ডাবল কেবিন রয়েছে ১২টি এবং সিঙ্গেল কেবিন রয়েছে ৯টি। প্রতিটি ডাবল কেবিনে আসন রয়েছে ৬টি করে এবং সিঙ্গেল কেবিনে আসন রয়েছে ৩টি করে। দিনের বেলায় এসব আসনে শুয়ে যাওয়া যাবে না, পরিবার পরিজন নিয়ে বসে যাওয়া যাবে। এসবের প্রতি আসনের ভাড়া ভ্যাটসহ ধরা হয়েছে ১৫৯০ টাকা।
অন্যদিকে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রাতে চলা ট্রেন কক্সবাজার এক্সপ্রেসে (৮১৪) যুক্ত হয়েছে এসি বার্থ (শুয়ে যাওয়ার আসন)। তিনটি কোচে মোট ডাবল কেবিন রয়েছে ৬টি এবং সিঙ্গেল কেবিন রয়েছে ১৫টি। প্রতিটি ডাবল কেবিনে আসন রয়েছে ৪টি করে এবং সিঙ্গেল কেবিনে সিট রয়েছে ২টি করে। রাতের বেলায় এসব আসনে শুয়ে কিংবা ঘুমিয়ে যাওয়া যাবে। এসবের প্রতি আসনের ভাড়া ভ্যাটসহ ধরা হয়েছে ২৩৮০ টাকা।












