বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ দ্বিতীয় দফায় সামান্য পরিমাণ ডিম দিয়েছে। নদী পাড়ের মৎস্যজীবী ও হালদা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রথম দফার মত এই দফার ডিমও নমুনা হিসেবে তারা দেখছেন। ডিম সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন, গত সোমবার সকাল থেকে নদীতে প্রবল স্রোত দেখে তারা মনে করেছিলেন মা মাছ ডিম দেবে। এই ধারণা থেকে নদীতে জাল পেতে বসলে জালে সামান্য পরিমাণ ডিমের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। অনেকেই নদীতে নৌকা ভাসিয়ে জাল পেতে কয়েক ঘণ্টা বসে থাকলেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করতে পারেননি। কেউ একশ, কেউ দেড়শ বা দুইশ গ্রাম পর্যন্ত নমুনা ডিম পায় নদীর বিভিন্ন স্থানে। যা সংগ্রহ করেছে তা দিয়ে পোনা উৎপাদন করা যাবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মনজুরুল কিবরিয়ার মতে, নিম্নচাপ সৃষ্টির সূত্রপাত থেকে পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাবে মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রা ছিল। পাশাপাশি নদীর পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে গিয়েছিল। এ কারণে মা মাছ ডিম দেয়ার অনুকূল পরিবেশ পাচ্ছে না। তিনি বলেন, আগামীতে দুটি জো রয়েছে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা। যে কোনো একটি জোতে পুরোদমে ডিম দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত হালদা নদীতে মা মাছ অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে ডিম ছাড়ে। এ বছর এপ্রিল মাসের অমাবস্যা ও পূর্ণিমার দুইটি তিথি চলে গেলেও মাছ ডিম ছাড়েনি। কিন্তু ৬ মে অমাবস্যা তিথিতে মাছ কিছু ডিম ছাড়ে। ডিম আহরণকারীরা প্রত্যাশা করেছিল এই মাসের পূর্ণিমা তিথিতে ডিম ছাড়বে। কিন্তু পূর্ণিমার তিথিতেও ডিম ছাড়েনি। এতে করে ডিম সংগ্রহকারীরা এক প্রকার হতাশ ছিল। গত সোমবার কিছু নমুনা ডিম ছাড়ার পর ডিম আহরণকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। তারা গত সোমবার থেকে নদী পাহারায় বসে ছিল ডিম সংগ্রহের আশায়। সামান্য কিছু নমুনা ডিম ছাড়া গতকাল রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত ডিম ছাড়ার কোনো আলামত দেখা যায়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।