৬২ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে গত মৌসুমে (২০২২–২৩) দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ২২ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন। আর চলতি মৌসুমে ৬৩ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। চলতি মাসের শুরুতে কয়েক দিনের হালকা বৃষ্টিপাতের পর অধিকাংশ লবণ মাঠে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ শুরু করে দেওয়া হলেও এখনও ২০ হাজার একরের জমিতে লবণ উৎপাদন হচ্ছে বলে জানায় বিসিক। বিসিকের সর্বশেষ হিসাব মতে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছে ২৪ লাখ ২৪ হাজার ৮৫০ মেট্রিক টন। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার একদিনে উৎপাদিত হয়েছে ১০ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন। গতকাল শুক্রবারও দেশে ১০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি লবণ উৎপাদন হয়েছে বলে ধারণা করছেন বিসিক কর্মকর্তারা। চলতি মৌসুমে দেশে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২৫ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমান গতিতে আর মাত্র ১০ দিন লবণ উৎপাদন সম্ভব হলে চলতি মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন কক্সবাজারস্থ বিসিক লবণ কেন্দ্রের উপ মহাব্যবস্থাপক মো জাফর ইকবাল ভুঁইয়া।
তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও, টেকনাফ, রামু ও বাঁশখালী উপজেলার ৬৮ হাজার ৩৫৭ একর জমিতে লবণ চাষ হয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর বাঁশখালীতে চলতি মৌসুমের প্রথম লবণ উৎপাদন শুরু হয় এবং এরপর ধীরে ধীরে কক্সবাজারের চাষীরাও লবণ উৎপাদনে নামেন। এখন মৌসুমের শেষ সময় চলছে। চলতি মাসের শুরুতে কয়েক দিনের হালকা বৃষ্টিপাতের পর অধিকাংশ লবণ মাঠে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও ২০ হাজার একরের বেশি জমিতে লবণ উৎপাদন হচ্ছে। ইতোমধ্যে চলতি মৌসুমের লবণ উৎপাদন সোয়া ২৪ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে গেছে। আগামী ১০দিন সময় হাতে পাওয়া গেলে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছি।
লবণ চাষীরা বলছেন, লবণ উৎপাদনের মৌসুম ১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ মে পর্যন্ত ৬ মাস সময় ধরা হলেও মূলত ফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখ মাসেই বেশি লবণ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে বৈশাখ–জ্যৈষ্ঠ মাসের তীব্র গরমে অন্য মাসের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ লবণ উৎপাদন হয়।
কক্সবাজারস্থ বিসিক লবণ কেন্দ্রের উপ মহাব্যবস্থাপক মো জাফর ইকবাল ভুঁইয়া জানান, গত মৌসুমেও দেশে লবণ উৎপাদন ৬২ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছিল। গত মৌসুমে (২০২২–২৩) দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ২২ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন। আর ২০২১–২২ মৌসুমে দেশের প্রায় ৬৩ হাজার ২৯১ একর জমিতে লবণের চাষ হয়। আর উৎপাদন হয়েছে ১৮ লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন। আর গত মৌসুমে (২০২২–২৩) লবণের চাষ হয়েছে ৬৬ হাজার ৪২৪ একর জমিতে।
চলতি মৌসুমে জমির পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি চাষীর সংখ্যাও ১ হাজার ২২৮ জন বেড়ে হয়েছে ৪০ হাজার ৬৯৫ জনে।